আগামী বছর ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। গতকাল বিকালে রংপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বেঠক শেষে তিনি এ কথা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচনের দুই মাস আগেই নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করা হবে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে রংপুরে মাঠ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে তিন দিনের সফরে রংপুরে রয়েছেন সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি গতকাল সকালে রংপুর বিভাগের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিকালে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। এ সময় সিইসি জানান, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা শুরুর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়। সে অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। এরই মধ্যে নির্বাচনি প্রচারণায় এআইর ব্যবহার মোকাবিলাতেও নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভোটের তারিখ নির্ধারণ হওয়ার দুই মাস আগেই তফসিল ঘোষণা করা হবে। সিইসি বলেন, ‘নির্বাচন সিস্টেমের প্রতি, নির্বাচন কমিশনের প্রতি এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও প্রশাসন মিলে যে একটা ভালো নির্বাচন করা সম্ভব এবং নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনা সম্ভব- সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একটা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করাটাই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের প্রধান চ্যালেঞ্জ।’ সিইসি আরও উল্লেখ করেন, ‘বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো, আরও উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আমরা চাই যাতে শান্তিপূর্ণ ও নির্ভয়ে মানুষ পছন্দের প্রার্থীদের ভোট দিতে পারে। মানুষ ভোট কেন্দ্রে যাওয়া ভুলে গেছে। তাদের ভোট কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াই নির্বাচন কমিশনের চ্যালেঞ্জ। এজন্য সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে। আর এই সচেতনতা তৈরিতে সাংবাদিকদের ভূমিকা রয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের কাছে সহযোগিতা চাই, পরামর্শ চাই।’ সিইসি বলেন, বিগত সময়ে যারা নির্বাচনপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের যথাসম্ভব বাদ দিয়ে নতুন লোক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় যোগ করা হবে। জাতির কাছে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই কাজ করছে ইসি। এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের আইনকানুন মেনে প্রফেশনালি ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সেভাবেই মোটিভেট করা হয়েছে। তারা কারও পক্ষের হয়ে কাজ করবে না, দেশের ১৮ কোটি জনগণের পক্ষে তারা কাজ করবে।’
গতকাল সকালে রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘এ এম এম নাসির উদ্দিন বলেছেন, নির্বাচনের আইনকানুন মেনে প্রফেশনালি ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন করতে আমরা ওয়াদাবদ্ধ। নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সেভাবেই মোটিভেট করা হয়েছে। তারা কারও পক্ষের হয়ে কাজ করবে না, দেশের ১৮ কোটি জনগণের পক্ষে তারা কাজ করবে।’
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাব। আমাদের সব কার্যক্রমের মাধ্যমে আশ্বস্ত করব- একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের। সব দলের জন্য নির্বাচনের মাঠ সমতল থাকবে।’ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দুলাল তালুকদারের সভাপতিত্বে প্রধান নির্বাচন কমিশনার রংপুর বিভাগের আট জেলার জেলা-উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে এদিন মতবিনিময় করেন।