ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ গোছাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। নির্বাচনের তোড়জোড় কিংবা আগে সংস্কার পরে নির্বাচন আলোচনায় যা-ই আসুক না কেন, রোডম্যাপ কষেই এগিয়ে যাচ্ছে দলটি। ইতোমধ্যে দলটি প্রায় ৩০০ আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা গণসংযোগ, ওয়ার্ডভিত্তিক সভা, সম্মেলনসহ বড় বড় সমাবেশ করছেন। নেতারা যোগ দিচ্ছেন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে। বার্তা দিচ্ছেন ঐক্য ও শান্তির। মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানা গেছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে ২৮০টির বেশি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম দলীয় ফোরামে ঘোষণা করা হয়েছে। পার্লামেন্টারি বোর্ড সে তালিকা অনুমোদনও দিয়েছে। বাকি আসনগুলোয় প্রার্থী চূড়ান্তের কাজ চলছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় যোগাযোগ ও গণসংযোগ শুরু করেছেন।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষাপটে ১৬ বছর পর স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে ফিরেছে জামায়াতে ইসলামী। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচনের সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকলেও মাঠ গোছাচ্ছে দলটি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ মুহূর্তে সারা দেশে দলটি ঘরোয়া কার্যক্রমে ব্যস্ত। এ ছাড়া বিভিন্ন সভা-সমাবেশে দলীয় প্রার্থীকে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মূল লক্ষ্য আগামী নির্বাচনে ইতিহাস সৃষ্টি করা। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় দলীয় ও সামাজিক কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন।
জামায়াতে ইসলামীর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২৮০টির বেশি আসনে দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে গেছে। বাকি আসনের প্রার্থী তালিকা বাছাইয়ের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে জোটবদ্ধ প্রার্থী দেওয়ারও চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী অন্য দলগুলোর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখছে জামায়াত।
জানতে চাইলে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি সব সময়ে রয়েছে। আসনভিত্তিক সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তারা মাঠে আছেন, সভা-সমাবেশ করছেন। মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। জনগণও সাড়া দিচ্ছেন। জাতীয় পর্যায়ে এখনো ঘোষণা করা হয়নি। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলে ওই সময়ের আলোকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদি জোট করা হয় তাহলে এক রকম সিদ্ধান্ত। না হলে আরেক রকম।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রায় ৩০০ আসনে সম্ভাব্য প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।’
প্রসঙ্গত শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দল দুটি অংশ নিয়েছিল। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল বিএনপি ও জামায়াত।