জাতির প্রতিষ্ঠাতা ও বীরদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়েছে ভাসানী জনশক্তি পার্টি। এ তালিকায় আছেন শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান এবং শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। দলটি জানিয়েছে, তাদের ‘ফোর ফাউন্ডিং ফাদারস অব দ্য ন্যাশন’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। গতকাল জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানানো হয়।
আলোচনায় ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর নেতৃত্বে দলটির মহাসচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিম এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. আবদুল কাদের, পারভীন নাসের খান ভাসানী, আমিনুল ইসলাম সেলিমসহ ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। এ সময় কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। ভাসানী জনশক্তি পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সব যোদ্ধা এবং ২০২৪ সালের গণ অভ্যুত্থানে নিহতদেরও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি হিসেবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ, গণতন্ত্র, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ যুক্ত করতে হবে। বহুত্ববাদের ব্যাখ্যায় সমকামিতা ও রূপান্তরকামিতা (ট্রান্সজেন্ডারিজম) অন্তর্ভুক্ত থাকবে না। দলটি জানিয়েছে, ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দের পরিবর্তে ধর্মীয় স্বাধীনতা শব্দটি ব্যবহার করতে হবে। বাংলা জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ’ শব্দ ব্যবহার করতে হবে। নিম্নকক্ষ ও উচ্চকক্ষ উভয়ের মেয়াদ পাঁচ বছর হবে। নিম্নকক্ষের সদস্যপদের জন্য প্রার্থীর ন্যূনতম বয়স হতে হবে ২৫ বছর। সংসদের স্থায়ী কমিটিতে সভাপতির পদ ৫০ ভাগ সরকারদলীয় ও ৫০ ভাগ বিরোধীদলীয় প্রতিনিধির দ্বারা গঠিত হতে হবে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর এবং নির্বাচন হবে ইলেকটোরাল কলেজের মাধ্যমে। তবে জেলা ও সিটি করপোরেশন থেকে কোনো ভোট গ্রহণ করা হবে না। উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনে ৭০ ভাগ আসন হবে রাজনৈতিক দলের সংসদীয় আসন অনুযায়ী এবং বাকি ৩০ ভাগ পেশাজীবীদের মধ্য থেকে নির্বাচিত হতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৯০ দিন। সদস্যসংখ্যা হবে ১৫ জন। দলটি তাদের প্রস্তাবে জানিয়েছে, প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বিবেচিত হবেন দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি, সরকারি চাকরিজীবী, অর্থ পাচারকারী। এদের কেউই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে বা কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে ভাসানী অনুসারী পরিষদ ১৫৫টিতে একমত বলে জানিয়েছে।