ব্যবহারযোগ্য ও নিরাপদ খাবার পানি প্রত্যেক নাগরিকের জন্য মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাই কোর্ট। ২০২০ সালে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে গতকাল বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি কাজী ওয়ালিউল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়টিকে ঐতিহাসিক বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। রুলে সব নাগরিকের জন্য নিরাপদ পানযোগ্য পানি সরবরাহ করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব কি না এবং এ নিরাপদ পানি পাওয়ার অধিকার প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার হিসেবে ঘোষণা করা যায় কি না তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। শুনানিতে এমিকাস কিউরি (আদালতকে সহায়তাকারী) হিসেবে মতামত দেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব ও মিনহাজুল হক চৌধুরী। ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব বলেন, এই ঐতিহাসিক রায়টি বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তম জনগোষ্ঠী উপকৃত হবে ও পানিবাহিত রোগ থেকে রক্ষা পাবে। রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপদ ও বিশুদ্ধ পানযোগ্য পানি পাওয়া মৌলিক অধিকার এবং তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এটি নিশ্চিত করার জন্য আদালত বেশ কয়েকটি নির্দেশনা দিয়েছেন। এক বছরের মধ্যে আদালত, ধর্মীয় উপাসনালয়, হাসপাতাল, রেলস্টেশন, হাটবাজার, এয়ারপোর্টসহ প্রত্যেক পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানযোগ্য পানি প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।
১০ বছরের মধ্যে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য নিরাপদ ও পানযোগ্য পানি সাশ্রয়ী মূল্যে নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ২০২৬ সালের মধ্যে পাবলিক প্লেসে নিরাপদ পানি বিনামূল্যে সরবরাহে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেই রিপোর্ট সরকারকে আদালতে দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের পানির যত উৎস রয়েছে সেগুলো যাতে শুকিয়ে না যায়, পানি অনিরাপদ, দূষিত না হয় সেগুলো সংরক্ষণ করার জন্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রায়ে। আদালত মামলাটি চলমান রেখেছেন।