প্রয়াত প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার এ টি এম শামসুজ্জামান। জীবনে অনেক মজার ঘটনা ঘটেছে এই তারকার জীবনে। স্কুলজীবনে এ টি এম শামসুজ্জামানের বন্ধু ছিলেন শিল্পী রফিকুন নবী। রফিকুন নবী প্রায়ই বলতেন, ‘কাল স্কুলে আসার সময় মাথায় তেল দিয়ে আসিস।’ বন্ধুর কথামতো এ টি এম মাথায় তেল দিয়ে স্কুলে আসতেন। খাতার সাদা পাতা রফিকুন নবী এ টি এমের তেল-মাথায় ঘষে নিতেন। তারপর ওই পাতায় তিনি ইচ্ছামতো ছবি আঁকতেন। পাড়ায় নাটকের মহড়া হচ্ছে। মানুষের ভিড়। কিন্তু বালক এ টি এম শামসুজ্জামানকে কেউ ঢুকতে দেয় না। এক দিন বুদ্ধি করে তিনি নাটকের শিল্পীদের চা খাওয়ানোর কথা বলে চায়ের কাপ নিয়ে ঢুকে পড়লেন মহড়া কক্ষে। এক দিন এক কাণ্ড হলো- প্রম্পটার আসেননি। এই সুযোগটি নিলেন এ টি এম শামসুজ্জামান। প্রম্পটারের কাজ শুরু করলেন। হয়ে গেলেন নাটকের একজন। চলচ্চিত্রে কাজের আশায় এ টি এম শামসুজ্জামান পরিচালক উদয়ন চৌধুরীর কাছে এসেছেন। তিনি ৫০০ পৃষ্ঠার একটি পাণ্ডুলপি হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললেন, তাড়াতাড়ি তিনটি কপি করে নিয়ে এসো। এ টি এম রাত জেগে খুব খেটে ১২ দিনের মধ্যেই তিনটি কপি করে জমা দিলেন। উদয়ন চৌধুরী দেখে প্রশংসা করে বললেন, দারুণ হয়েছে! তারপর তিনটি পাণ্ডুলিপিই তিনি ময়লার বাক্সে ছুড়ে ফেলে দিলেন। এ টি এম অবাক! উদয়ন চৌধুরী বললেন, আমি তোমার ধৈর্যশক্তির পরীক্ষা নিতে চেয়েছিলাম। তুমি পরীক্ষায় পাস করেছো। তুমি এখন থেকে আমার তিন নম্বর সহকারী। সিনেমায় নাম লিখিয়েছেন শুনেই এ টি এম শামসুজ্জামানের বাবা প্রচণ্ড রেগে গেলেন। ফল হলো ভয়াবহ! তিনি ছেলেকে গলা ধাক্কা দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন। তাতে অবশ্য ছেলের মন খারাপ হলো না। তিনি কাপড়-চোপড় নিয়ে সোজা চলে গেলেন উদয়ন চৌধুরীর কাছে। আমজাদ হোসেন এ টি এম শামসুজ্জামানকে খুঁজছেন। দেখা করতে যেতেই আমজাদ হোসেন বললেন, ‘নয়নমণি’ বানাব। আপনি মোড়লের চরিত্রে অভিনয় করবেন। এ টি এম হাসবেন না কাঁদবেন বুঝতে পারলেন না। বললেন, ভাই, আমার চেহারা না-হয় ভালো না, তাই বলে ভরা মজলিশে মশকরা করেন কেন? আমজাদ হোসেন হেসে বললেন, মজা নয়। আমি আপনাকে নেওয়ার জন্যই বলছি। এরপর ‘নয়নমণি’ মুক্তি পেল। এ টি এম শামসুজ্জামান এই সিনেমা দিয়েই দর্শকের নয়নের মণি হয়ে উঠলেন। চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। ভালোমন্দ দুই ধরনের চরিত্রেই অভিনয় করেছেন। মন্দ চরিত্রে অভিনয় এমনভাবে বিশ্বাসযোগ্য হতো যে, মাঝেমধ্যে তাঁকে বিড়ম্বনায় পড়তে হতো। এ টি এম শামসুজ্জামান একবার গারো পাহাড়ে শুটিং করতে গিয়েছিলেন। পরিচালক ছিলেন এহতেশাম। এ টি এম শামসুজ্জামান জুমার দিনে গোসল করে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে যখন মসজিদে যাচ্ছিলেন তখন একজন লোক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় যাচ্ছেন? এ টি এম বললেন, মসজিদে যাচ্ছি। লোকটি বলল, জুমার নামাজ পড়ে আপনার লাভ কী? জীবনে এত আকাম করেছেন বুঝতে পারছেন না? আপনি একটা বাজে লোক! আর রাস্তায় বের হলেই এ টি এম শামসুজ্জামান কতবার যে ‘বদ লোক’ কথাটা শুনেছেন, তার হিসাব নেই। একবার তিনি এক গ্রামে শুটিং করতে গিয়েছিলেন। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় ওই গ্রামের এক বউ পানিভর্তি কলস নিয়ে যাচ্ছিল। তাঁকে দেখে ‘খচ্চর’ বলে চিৎকার করে কলস রেখে দৌড়ে পালিয়েছিল সেই বউ।
শিরোনাম
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (২২ জুলাই)
- উত্তরায় প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত : ৮ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর
- রাজনীতিকে ‘অলাভজনক’ করাই হবে সবচেয়ে বড় সংস্কার
- উন্নয়নের আড়ালে কালো অর্থনীতির উদ্ভব
- বিমান বিধ্বস্তে হতাহতের মা-বাবাদের কী জবাব দেব: প্রধান উপদেষ্টা
- সিদ্ধিরগঞ্জে ৪০ কেজি পলিথিন শপিং ব্যাগ জব্দ
- সন্তানদের ছবি হাতে হাসপাতালে ঘুরছেন বহু স্বজন
- পশ্চিমবঙ্গে ভাষা আন্দোলনের ডাক মমতার
- নেপালকে উড়িয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
- পরকীয়া সন্দেহে স্বামীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে খুন
- ব্রিতে বৃক্ষরোপণ ও চারা বিতরণ
- পিআর পদ্ধতির নির্বাচন ফ্যাসিবাদের পথ সুগম করবে : তারেক রহমান
- সাগরিকার গোলে প্রথমার্ধে এগিয়ে বাংলাদেশ
- সোনারগাঁয়ে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার
- অবশেষে উড়তে যাচ্ছে ভারতে আটকে থাকা ব্রিটিশ যুদ্ধবিমান
- চট্টগ্রামে বরফকলে গ্যাস লিকেজে শ্রমিকের মৃত্যু
- বিমান বিধ্বস্তে হতাহত : মঙ্গলবার দেশব্যাপী বিএনপির দোয়া মাহফিল
- আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন প্রধান উপদেষ্টা
- নিখোঁজের ৫ দিন পর কৃষকের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার
- এনসিপির দুই দিনের সব কর্মসূচি স্থগিত
এ টি এমের মাথার তেল কাগজে ঘষে নিতেন রফিকুন নবী
পান্থ আফজাল
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর