ছোটপর্দা থেকে ওটিটি, এমনকি সিনেমা- সব জায়গায় নিজের প্রতিভা দিয়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন অভিনেত্রী তাসনিয়া ফারিণ। ঈদ উপলক্ষে তাঁর অভিনীত সিনেমা ‘ইনসাফ’ যেমন দর্শক আগ্রহে রয়েছে, তেমনি সবচেয়ে বেশি আলোচনায় তাঁর ‘প্রিয় প্রজাপতি’ নাটকটি। জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণের অনবদ্য অভিনয় এ নাটকটিকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছে। তাঁদের প্রতিটি চাহনি, প্রতিটি অভিব্যক্তি যেন ভালোবাসার এক নীরব কাব্য রচনা করেছে। ‘প্রিয় প্রজাপতি’ নাটকে ফারিণের সংযত অভিনয় এবং সংলাপবিহীন মুহূর্তগুলোও দর্শকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তাই তিনি এখন ভক্তদের কাছে ‘প্রিয় প্রজাপতি’ নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছেন। নাটকটি নির্মাণ করেছেন জাকারিয়া সৌখিন, যিনি বরাবরই আবেগঘন প্রেমকাহিনির জন্য পরিচিত। এ পর্যন্ত ক্যাপিটাল ড্রামা ইউটিউব চ্যানেলে নাটকের ভিন্নধর্মী গল্প, নির্মাণ আর ফারিণ-অপূর্বর রসায়ন দেখেছে ৫.৭ মিলিয়নের অধিক দর্শক। দর্শক জনপ্রিয়তায় এগিয়ে থাকা বসুন্ধরা টিস্যু পরিবেশিত, ক্যাপিটাল ড্রামার নাটক ‘প্রিয় প্রজাপতি’ নাটকটি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সাদাত হোসাইনের ‘বিলবোর্ড’ গল্প থেকে অনুপ্রাণিত। কিছু নাটকের গল্প দেখলে মনটা মুহূর্তের ভিতরেই ভীষণ ভালো হয়ে যায়। এ নাটকের গল্পটাও ঠিক সেরকম। দুজন মানুষের কিছু অপ্রকাশিত অনুভূতিই কখনো কখনো একটা ভালোবাসার গল্পকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। আর সামনের দিকে এগিয়ে যেতে যেতেই হয়তো একটা সময় সেই গল্পগুলো খুঁজে পায় তাদের নতুন গন্তব্যের ঠিকানা। গল্পটা মুগ্ধ ও প্রজাপতির। লেটলতিফ মুগ্ধের সঙ্গে একই অফিসে কাজ করে প্রজাপতি। প্রথম দর্শনেই ভালোলাগার সূচনা হলেও মুখ ফুটে বলার সাহসটা নেই কারও! চলতে থাকে প্রজাপতির ডানায় ভেসে বেড়ানোর স্বপ্ন আর আর বাড়তে থাকে একরাশ মুগ্ধতা! তারপর? এমনই গল্পে ‘প্রিয় প্রজাপতি’। এ নাটকের ‘প্রজাপতি এনে দিতে পারি’ গানটি লিখেছেন সোমেশ্বর অলি, সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন জাহিদ নীরব। আতিয়া আনিসা এবং নীরব দুজনের কণ্ঠে গানটি যেন ভালোবাসার এক অমর সৃষ্টিতে পরিণত হয়েছে।
এদিকে ঢাকাই সিনেমায় চিত্রনায়িকা হিসেবে প্রথমবার বড়পর্দায় ‘ইসনাফ’ দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে দারুণ উচ্ছ্বসিত তাসনিয়া ফারিণ। সঞ্জয় সমদ্দারের ‘ইনসাফ’-এর মাধ্যমেই কমার্শিয়াল ঘরানায় অভিষেক হলো ফারিণের। নাটক-বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিনয় জীবনের যাত্রা শুরু করলেও অল্প সময়েই ফারিণ অভিনয়-দক্ষতায় জায়গা করে নিয়েছেন দর্শক ও নির্মাতাদের মনে। এরপর ওটিটি প্ল্যাটফর্মে নিজের অবস্থান শক্ত করার পর ‘ফাতিমা’ সিনেমার মাধ্যমে বড়পর্দায় পা রাখেন তিনি। তবে ‘ইনসাফ’-এ একদম নতুন রূপে ধরা দিয়েছেন ফারিণ, কমার্শিয়াল ছবির রঙিন ছন্দে নেচেছেন আইটেম গানে, ছিলেন অ্যাকশনধর্মী প্লটে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে। সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে ফারিণ বলেন, ‘আমি সব সময়ই বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয়ের চেষ্টা করেছি। তবে ‘ইনসাফ’ আমার জন্য একদম ভিন্ন অভিজ্ঞতা। শুরুতে একটু দ্বিধা ছিল, দর্শক কীভাবে নেবে এ পরিবর্তন? কিন্তু সাড়া দেখে আমি অভিভূত। আমি সত্যিই খুব ভাগ্যবান।’ ‘ইনসাফ’ সিনেমায় তাসনিয়া ফারিণ অভিনয় করেছেন পুলিশ ইন্সপেক্টর জাহান চরিত্রে। যে কি না গ্যাংস্টার ইউসুফকে ধরার জন্য বদ্ধপরিকর। রাফ অ্যান্ড টাফ লুকে পাশের বাড়ির মেয়ে হয়ে থাকা ফারিণ যেন প্রাণসঞ্চার করেছেন। তিনি যে ভার্সেটাইল সেটা প্রমাণ করার জন্যই হয়তো ইনসাফের এ চরিত্রটা নির্বাচন করেছেন। পর্দায় তাঁর স্টাইলিশ এন্টি, অ্যাকশন, রোমান্স- সবকিছু মিলিয়ে জম্পেশ একটা ডেব্যুই হয়েছে তাঁর। তাসনিয়া ফারিণ তাঁর জার্নি নিয়ে বলেন, ‘আমার জার্নিটা পুরো একার ছিল। সম্পূর্ণ একা। এ পর্যন্ত আসতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। অনেক ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ক্যারিয়ারে ভালো একটি পর্যায়ে থাকতে আমি সব সময়ই বেছে বেছে কাজ করতে আগ্রহী।’