রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মীরবাগ শঠিপাড়া গ্রামের রাকিব আল ইসলাম মিম। ২০১৫ সালের এক বর্ষার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ির সামনে একটি কালো অচেনা সাপ দেখে চমকে ওঠেন। পরে সাহসিকতার সঙ্গে সেটির ছবি তোলেন। শুরু করেন সাপটির পরিচয় জানার চেষ্টা। অনলাইনে খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারেন, এটি ছিল মারাত্মক বিষধর কালচে (Wall’s Krait) সাপ। সেদিন থেকেই রাকিবের সাপ নিয়ে পথচলা। সাপসহ যে কোনো প্রাণীর কল্যাণে কাজ করাই তাঁর লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়। তিনি অনলাইনে সর্পবিশারদদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন, সাপ চিনতে শেখেন, সংগ্রহ করেন বিভিন্ন পিডিএফ বই ও প্রশিক্ষণমূলক ভিডিও। সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু যে অনেকাংশেই জনসচেতনতার অভাবে, তা উপলব্ধি করেন। তাই শুরু করেন সচেতনতামূলক কার্যক্রম। জনসচেতনতা ছড়ানো ও সাপ উদ্ধারের কাজ একার পক্ষে কঠিন হয়ে উঠলে ২০১৯ সালে রাকিব গড়ে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘স্নেক রেসকিউ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ অ্যাওয়ারনেস অর্গানাইজেশন, রংপুর’। একটি ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করতেন তিনি। জীববৈচিত্র্য রক্ষার নেশায় একসময় চাকরি ছেড়ে দিয়ে বর্তমানে গ্রামের বাড়িতেই রয়েছেন। কোথাও সাপ কিংবা বিপন্ন প্রাণীর সন্ধান পেলে ছুটে যান সেখানে। বাংলাদেশ বন বিভাগের সহায়তায় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা ও গ্রামে এ সংগঠন কাজ করছে সাপ ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার ও রক্ষায়। এখন পর্যন্ত তারা ৩ শতাধিক সাপ ও অন্যান্য বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি সাপ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে সভা, সেমিনার ও প্রশিক্ষণ কর্মশালাও করেছেন। রাকিব আল ইসলাম মিম বলেন, ‘সাপ দেখলেই সাধারণত মানুষ ভয় পায়। বিষধর সাপের কামড়ে প্রতি বছর বাংলাদেশে শত শত মানুষের মৃত্যু হয়।’ বিষাক্ত প্রাণীটি রক্ষা করাই তাঁর মূল উদ্দেশ্যে। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও এগিয়ে যাবেন এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। রংপুর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মিম যে কাজটি করছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’