নানা কারণে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে দিন দিন বাড়ছে বায়ুদূষণ। দীর্ঘদিন ধরে মেগাসিটি ঢাকাও বায়ুদূষণের কবলে। বেশ কিছু দিন ধরে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রথমদিকেই রয়েছে রাজধানী ঢাকা। তবে সম্প্রতি শহরটির বায়ুমানের কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বিশেষ করে গত কয়েকদিন ধরে ঢাকার বায়ুমান নিয়ে ইতিবাচক খবরই পাওয়া যাচ্ছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানী ঢাকার বাতাস সহনীয়।
বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার ঢাকার বায়ুমান ৬০, যা সহনীয় পর্যায়ের বাতাসের নির্দেশক। আজ দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৪৯। গতকাল সোমবার ৫৫ বায়ুমান নিয়ে ৬০তম স্থানে ছিল ঢাকা।
আজ বায়ুদূষণের তালিকায় শীর্ষে আছে ডেমোক্রেটিক সৌদি আরবের রিয়াদ। সাধারণত দূষণের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে থাকলেও প্রথম স্থানে কমই দেখা যায় শহরটিকে। তবে, আজ রিয়াদের বাতাসের মান খুব খারাপই বলা যায়। শহরটির বায়ুমান ২৩৬, যা খুবই অস্বাস্থ্যকর বাতাসের নির্দেশক। মঙ্গলবার বায়ুদূষণে শীর্ষ পাঁচে থাকা অন্য শহরগুলো হলো জেরুসালেম, ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, ইরাকের বাগদাদ ও উগান্ডার কাম্পালা। শহরগুলোর বায়ুমান যথাক্রমে ১৯০, ১৮১, ১৭৬ ও ১৫৫। সব কটি শহরের বাতাস আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর পর্যায়ে রয়েছে।
বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ-এয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশি মাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদরোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১-১৫০ এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।
বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতি বছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ