এড্ডি টিও (Eddie Teo) সিঙ্গাপুরের একজন অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, অস্ট্রেলিয়ায় সিঙ্গাপুরের হাইকমিশনারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৮ মেয়াদে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে সিঙ্গাপুরের সিভিল সার্ভিসের মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে তাঁকে রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়, এখনো সে দায়িত্বে বহাল রয়েছেন। প্রসঙ্গত সিঙ্গাপুরে ১৯৯১ সালে সংবিধান সংশোধন করে প্রেসিডেন্টকে দেশের সঞ্চিত রিজার্ভ ও পাবলিক সার্ভিস তথা সরকারি চাকরির পেশাদারত্ব ও সততা বজায় রাখার লক্ষ্যে সংরক্ষণমূলক বিশেষ এখতিয়ার প্রদান করা হয় এবং এ কাজে প্রেসিডেন্টকে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদানের জন্য একটি উপদেষ্টা পরিষদের বিধান করা হয়। সরকারি রাজস্ব ও নিয়োগসংক্রান্ত বিষয়গুলোতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের জন্য এই উপদেষ্টা পরিষদের পরামর্শ গ্রহণ বাধ্যতামূলক করা হয়। এই পরিষদে সাধারণত আটজন সদস্য থাকেন; তন্মধ্যে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী তিনজন করে, প্রধান বিচারপতি একজন এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান একজনকে মনোনয়ন প্রদান করেন। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয়ে ফিরে আসি। এড্ডি টিও একটি প্রোগ্রামে স্মৃতিচারণ করেন, যা পরে একটি সংবাদপত্রের নিবন্ধে উদ্ধৃত করা হয়, ‘যখন আমি ১৯৭০ সালে পাবলিক সার্ভিসে যোগ দিয়েছিলাম, তখন মিস্টার লি কুয়ান ইউ (সিঙ্গাপুরের সাবেক প্রেসিডেন্ট, আধুনিক সিঙ্গাপুরের রূপকার) ইতোমধ্যেই এগারো বছর ধরে ব্রিটিশ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পাবলিক সার্ভিসকে একটি স্বাধীন সিঙ্গাপুর রাষ্ট্রের প্রয়োজন অনুযায়ী রূপান্তর করার কাজ করছিলেন। তত দিনে নাগরিকসেবা-কাঠামোর মধ্যে দুর্নীতিমুক্তির একটি শক্তিশালী সংস্কৃতি গড়ে উঠেছিল।’ আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডেভিড রিভকিনের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিও তিনি ওই স্মৃতিচারণে উল্লেখ করেন। যখন মি. রিভকিন তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, সিঙ্গাপুরে দুর্নীতির কোনো স্থান নেই- এই নৈতিকতাকে সরকারি সেবায় কীভাবে প্রয়োগ এবং বজায় রাখা হচ্ছে। তিনি তখন বলেছিলেন, ‘এখানে (অর্থাৎ সিঙ্গাপুরে) কোনো ট্রেনিং ক্লাস বা ব্রেনওয়াশিং সেশন হয়নি; বরং সরকারি কর্মকর্তারা আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করত। আমরা দুর্নীতিমুক্ত ছিলাম, কারণ তাঁরা দুর্নীতিমুক্ত ছিলেন। আমরা দেখতাম তাঁরা সহজ, সাদামাটা এবং ব্যয়বহুল নয়- এমন জীবনযাপন করেন এবং পুরোপুরি দেশ গঠন ও সিঙ্গাপুরীয়দের জীবনমান উন্নত করতে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন।
আমাদের প্রাথমিক প্রজন্মের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা সব সিনিয়র অফিসার রাজনীতিবিদদের এই সাদামাটা অভ্যাসের গল্প বলতে পারবেন। লি কুয়ান ইউ এবং গোহ কেং সুয়ের মতো মানুষের কাছে ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স শব্দের কোনো অর্থ ছিল না। কাজ জীবন, আর জীবন কাজ- এভাবেই তাঁদের জীবন পরিচালিত হতো। আমরা দেখছিলাম যে দুর্নীতি প্রতিরোধ ব্যুরো সবার জন্য, পদমর্যাদা নির্বিশেষে, দুর্নীতিবিরোধী আইন প্রয়োগ করত। তাই আমরা অনুপ্রাণিত হতাম আমাদের নেতাদের উদাহরণমূলক আচরণ ও তাঁদের অভীষ্ট লক্ষ্য দ্বারা এবং মনের গভীরে আমাদের সংযমে রাখত “ভয়”। সেই সময় অর্থ বা আর্থিক প্রলোভন কোনো ভূমিকা রাখত না।’
সিঙ্গাপুরের সিভিল সার্ভিস বর্তমানে বিশ্বের সেরা পাবলিক সার্ভিসগুলোর অন্যতম। একটি দক্ষ, নিরপেক্ষ, কার্যকর এবং পেশাদার সার্ভিস প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রনায়ক লি কুয়ান ইউ-এর অঙ্গীকার ছিল অপ্রতিরোধ্য। এ বিষয়ে তিনি কোনো ছাড় দেননি। ব্রিটিশ প্রশাসনিক রীতি থেকে পাওয়া উত্তম বৈশিষ্ট্যগুলোকে চাকরি ক্ষেত্রে তিনি সংরক্ষণ করেছিলেন বটে, কিন্তু রাজনৈতিক আনুগত্যের পরিবর্তে পেশাগত সক্ষমতাকে মূল মানদণ্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ছাড়েন। তিনি প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন : যে মুহূর্তে সরকারি চাকরির নিয়োগে রাজনৈতিক স্বার্থ বা পক্ষপাত অনুপ্রবেশ করে, প্রজাতন্ত্রের অবনতি বা অবক্ষয় শুরু হয়। স্বভাবতই এই নিয়োগ মানে শুধু সরকারি চাকরিতে প্রথম নিয়োগ নয় বরং পদোন্নতি, পদায়ন, সবই। তিনি মনে করতেন প্রশাসনকে ‘government of the day’ এর সঙ্গে কাজ করতে হবে; কিন্তু কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি আনুগত্য নয়, রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যই হবে চূড়ান্ত। তাঁর বিখ্যাত উক্তি : Ministers should decide policy and civil servants must execute them without fear or favour (মন্ত্রীগণ নীতি নির্ধারণ করবেন আর আমলারা সেটি বাস্তবায়ন করবেন কোনো প্রকার ভয় বা পক্ষপাত ছাড়াই)। এই উক্তির মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক সরকারের নীতি প্রণয়ন এবং সরকারি কর্মচারী কর্তৃক তার বাস্তবায়ন, এই দুটি বিষয়ের বিভাজনরেখাটি স্পষ্ট করার চেষ্টা করেছেন। যা প্রশাসনিক নিরপেক্ষতার অন্যতম মূলনীতি। বিষয়টি সহজভাবে বোঝার জন্য ছোট করে একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। মনে করি, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকার এই পলিসি গ্রহণ করলেন, দেশের সব ভরাট-মজা পুকুর, খাল, জলাশয় খনন-সংস্কার করে মৎস্য চাষ উপযোগী কিংবা জলাধার হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারি কর্মচারীর কাজ হবে এই নীতি বাস্তবায়নে কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত কর এবং স্বচ্ছ ও আইনানুগ প্রক্রিয়ায় উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতির মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। এটি প্রশাসনিক কাজ; এর মধ্যে রাজনীতির অনুপ্রবেশ হওয়ার কথা নয়। আর যদি বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব ঢুকে পড়ে, তাহলেই সীমারেখার লঙ্ঘন হয়। এতে করে খোদ নীতি বাস্তবায়নই কিন্তু হুমকির মুখ পড়ে এবং আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাষ্ট্র ও জনগণ। নিরপেক্ষ জনপ্রশাসনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ দেওয়ার জন্য আজকাল যেসব দেশের নাম উচ্চারণ করা হয়, সেসব দেশে প্রশাসনিক সংস্কারের গৌরবময় পদক্ষেপগুলোর পশ্চাতে কোনো দৃঢ়চেতা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, নয়তো রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভূমিকাই মুখ্য হিসেবে পরিলক্ষিত হয়।
ব্রিটেনে ২০১০ সালের সাধারণ নির্বাচনে কোনো দল এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায়, কনজারভেটিভ এবং লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টি মিলে জোট সরকার গঠন করে এবং সরকারি চাকরির পেশাদারত্ব ও নিরপেক্ষতা প্রতিষ্ঠায় যুগান্তকারী বেশ কিছু বিধান প্রণয়ন করে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জন হাওয়ার্ডের নেতৃত্বে লিবারেল পার্টি এবং বিরোধী লেবার পার্টি উভয়ে একমত হয়ে নিরপেক্ষ পাবলিক সার্ভিসের আইনি কাঠামো পাস করে। সুইডেনে নতুন সংবিধান প্রণয়নের সময় সেখানে নিরপেক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত প্রশাসনের নিশ্চয়তামূলক বিধান রাখা হয় এবং সব প্রধান দল ঐক্যবদ্ধভাবে তাতে সমর্থন দেয়। নিউজিল্যান্ডে প্রশাসনিক নিরপেক্ষতা সংরক্ষণে ২০২০ সালে নতুন পাবলিক সার্ভিস আইন করার সময় প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লিখিত হয়; বিরোধী দল ন্যাশনাল পার্টিও তাতে সমর্থন দেয়।
কানাডায় ২০১৫ সালে জাস্টিন ট্রুডো সরকার ‘অরাজনৈতিক পাবলিক সার্ভিস’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করে এবং মন্ত্রীগণ কর্মকর্তাদের রাজনৈতিক কাজে না টানার প্রতিশ্রুতি দেন। সেখানে সব ফেডারেল দলই সিভিল সার্ভিস কোডের প্রতি প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা কানাডার প্রশাসনিক নিরপেক্ষতার ভিত্তি। সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রনায়ক লি কুয়ান ইউ এর যে অবস্থান আমরা দেখলাম, তা পরবর্তী সব সরকারই ধরে রেখেছে। সিঙ্গাপুরে মন্ত্রীদের কোড অব কান্ডাক্টের অনুচ্ছেদ ৪.৩ এ স্পষ্ট করে বলা হয়েছে : একজন মন্ত্রী কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে এমন কোনো কাজ করতে নির্দেশ বা অনুরোধ করতে পারবেন না, যা সিঙ্গাপুর সিভিল সার্ভিসের মৌলিক মূল্যবোধসমূহ, তথা বিশুদ্ধতা, নিরপেক্ষতা, শুদ্ধাচার এবং সততার সাংঘর্ষিক হয় এবং সব রাজনৈতিক এবং মতপার্থক্যজনিত বিষয়ে নিরপেক্ষ রাখার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্বের প্রতি তাদের সম্মান দেখাতে হবে। বিভিন্ন দেশে দলগুলোর নির্বাচনি ইশতেহারে ‘রাজনীতি-নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন’ নীতি ঘোষণা করার নজির এখন আগের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলসমূহের আসন্ন নির্বাচনি ইশতেহারে বিষয়টি গুরুত্ব পাবে- এই প্রত্যাশায় রইলাম। সম্প্রতি ১৭ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের প্রতিবেদনে নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন প্রতিষ্ঠার কথা সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও বিষয়টির গুরুত্ব এবং অপরিহার্যতার বিষয়ে নিশ্চয় সব একমত হবেন। প্রতিবেদনের ৭১ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত, রাষ্ট্রীয় ও আইনি ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে স্বার্থের দ্বন্দ্ব নিরসন ও প্রতিরোধসংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে মর্মে ৩২টি রাজনৈতিক দলই একমত হয়েছে। নির্বাচনের একটি ঘটনা দিয়ে শেষ করি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ভারতের বারাণসী জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (জেলা প্রশাসক) প্রাঞ্জল যাদব বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনি প্রচারের জন্য একটি র্যালি আয়োজনের অনুমতি নাকচ করে দেন। ফলে তাঁকে যুগপৎ সমালোচনা ও প্রশংসার মুখোমুখি হতে হয়। বিজেপি তাঁর তাৎক্ষণিক অপসারণের দাবি জানায় এবং অভিযোগ করে যে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়ার ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার যাদবের ‘অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট’ ভূমিকার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ‘নীরব দর্শক’-এর ভূমিকা পালন করছে। অপরদিকে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলগুলো তাঁর দৃঢ়তার প্রশংসা করে।
এই ঘটনায় নির্বাচন কমিশন কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। প্রধান নির্বচন কমিশনার জানিয়ে দেন, রিটার্নিং অফিসার তথা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আন্তরিকতা বা যোগ্যতা নিয়ে তাঁদের কোনো সংশয় নেই, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পেশাদারত্বের সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি কর্মকর্তার গৃহীত সিদ্ধান্ত যে সব সময় সবার প্রশংসা কুড়াবে, তা নয়। তিনি যদি আইনের মধ্যে থেকে নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা পেশাদার দৃষ্টিভঙ্গি প্রদর্শন করেন, তবে দিনশেষে তাঁর অবস্থান যথাযথ বলে সাব্যস্ত হবে বলে আশা করা যায়।
কিন্তু সংকটময় মুহূর্তে এই রকম ‘স্ট্যান্ড’ নেওয়ার জন্য জন্য ‘চাকরিনির্ভর’ কর্মচারীর যে সাহস ও দৃঢ়তার প্রয়োজন হয়, তার আইনি এবং মনস্তাত্ত্বিক ভিত্তি রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকগণকে গড়ে দিতে হবে। দেশে দেশে আমলাতন্ত্রের উৎকর্ষ ও পেশাদারত্বে উত্তরণের অভিজ্ঞতা তারই সাক্ষ্য দেয়। যেমনটি সিঙ্গাপুরের অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র আমলা এড্ডি তেও স্মৃতিচারণ করছিলেন, ‘তাই আমরা অনুপ্রাণিত হতাম আমাদের নেতাদের উদাহরণমূলক আচরণ ও তাঁদের অভীষ্ট লক্ষ্য দ্বারা এবং মনের গভীরে আমাদের সংযমে রাখত “ভয়”। সেই সময় অর্থ বা আর্থিক প্রলোভন কোনো ভূমিকা রাখত না।’
লেখক : সরকারের যুগ্ম সচিব, যুগ্ম মহাসচিব, বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন