স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার মামলার রায় কেন্দ্র করে নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আইন প্রয়োগকারী সব সংস্থা মাঠপর্যায়ে বিশেষ নির্দেশনা জারি করবে।
গতকাল বিকালে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিনি কনফারেন্স রুমে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হবে। এ উপলক্ষে দেশি-বিদেশি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার নানা ষড়যন্ত্র করছে। এরই মধ্যে ঢাকায় লকডাউন কর্মসূচি পালনের জন্য বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা চলছে। গতকাল বিষয়টি নিয়ে কোর কমিটির বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা আলোচনা করেন। এরপর সিদ্ধান্ত হয়, সর্বোচ্চ সতর্ক থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে তল্লাশির বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। রায়কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে কোনো ধরনের অবনতি না ঘটে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। যদিও এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা দাবি করেন, কোনো ধরনের নিরাপত্তার আশঙ্কা নেই। বৈঠক সূত্র আরও বলছে, বৈঠকে গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয় কাদিয়ানিদের নিষিদ্ধের দাবি সংক্রান্ত ১৫ নভেম্বরের মিছিল এবং সমাবেশ নিয়ে। ১৫ নভেম্বর ইসলামিক দলগুলো রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কাদিয়ানিদের নিষিদ্ধের দাবিতে এক কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একটি সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীতে আন্দোলনরত শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবি থাকলে সরকার তা মেনে নিতে পারে। কারণ তাদের নিবৃত্ত করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা প্রায়ই সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপসহ নানা পদ্ধতি অবলম্বন করছে। দেশবিরোধী চক্র এর সুযোগ নিতে পারে। সূত্র জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের সদস্যদের কাছ থেকে প্রাপ্ত ভয়ংকর তথ্যের বিষয়টিও আলোচনা হয়েছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে। গ্রেপ্তাররা তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলেছেন, তাদের গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্র বলছে, গ্রেপ্তাররা ঢাকা শহরে ঝটিকা মিছিলের মাধ্যমে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। আগামী ১০-১২ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার আশপাশে ও ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের স্লোগানসংবলিত ১ লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করছিল তারা।