জনসংখ্যার তুলনায় সীমিত আয়তনের বাংলাদেশের জন্য সুখবর বয়ে আনছে সাগর প্রান্তে ভূমি জেগে ওঠার ঘটনা। গত ৫৪ বছরে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এক হাজার বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকা। মেঘনা অববাহিকা ও বঙ্গোপসাগরে ছয় শতাধিক ডুবোচর জেগে ওঠার প্রক্রিয়ায় রয়েছে এবং সেগুলোর মোট আয়তন ১ হাজার ১০০ কিলোমিটারেরও বেশি। যেগুলো ভাটির সময় জেগে উঠছে এবং সান্ত্বনা জাগাচ্ছে জনসংখ্যার ভারে নুয়ে পড়া বাংলাদেশের মানুষের মনে। বাংলাদেশ নামের বদ্বীপের সিংহভাগ এলাকা একসময় ছিল সাগরের নিচে। উজান থেকে নদীর পানিতে আসা পলি ও বালু সাগরে পড়ে গড়ে উঠেছে এ ভূখণ্ডের বৃহৎ এলাকা। বর্তমানে প্রতি বছর গড়ে ৩০ বর্গকিলোমিটার যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে। উপকূলজুড়ে চর জাগার বিষয়টি উঠে এসেছে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান স্পারসোর গবেষণায়। গবেষণায় ১৯৮৯ এবং ২০২৫ সালের স্যাটেলাইট ছবি ব্যবহার এবং বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, সন্দ্বীপসহ আশপাশে ১৯৮৯ সালে বসবাসযোগ্য স্থায়ী ভূমি ছিল ৩২৮ বর্গকিলোমিটার, যা ২০২৫ সালে বেড়ে হয়েছে ৭২৬ বর্গকিলোমিটার। এ ছাড়া ৩৬ বছর আগে ডুবোচর ছিল ৩৩৫ বর্গকিলোমিটার, যা এখন বেড়ে হয়েছে ৪১৩ বর্গকিলোমিটার। তিন যুগ আগে যেসব স্থানে ডুবোচর ছিল, সেগুলো এখন মানুষের বসতিতে পরিণত হয়েছে। ৩৬ বছরের ব্যবধানে দেশের দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপের আয়তন ৪৭৫ বর্গকিলোমিটার বেড়েছে। এই সময়ের মধ্যে ডুবোচর থেকে তৈরি হয়েছে স্বর্ণদ্বীপ ও ভাসানচর। স্পারসোর স্যাটেলাইট চিত্র অনুযায়ী ভাটার সময় উপকূলজুড়ে ছয় শতাধিক ডুবোচর মাথা উঁচু করে জেগে উঠছে। এগুলোর মোট আয়তন প্রায় ১ হাজার ১০০ বর্গকিলোমিটার। সবচেয়ে বড় ডুবোচরটির আয়তন ৮৫ বর্গকিলোমিটার। হিমালয় থেকে আসা বিভিন্ন নদী বছরে ১ হাজার ৬০ বিলিয়ন পলি নিয়ে আসে। যা ক্রমান্বয়ে ডুবোচর গড়ে তোলে। ডুবোচরে কেওড়া বনায়ন করে সেগুলোর স্থায়ী রূপ দেওয়া হয়। কিছু চর আবার প্রাকৃতিক নিয়মেই বিলীন হয়ে যায়। ক্রশড্যাম দেওয়া হলে উজান থেকে আসা পলির সিংহভাগই উপকূলভাগে জমে চরে পরিণত হবে। এ ব্যাপারে সরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিলে দেশের আয়তন বাড়বে আরও দ্রুতগতিতে।