আবার মথা চাড়া দিচ্ছে বাজার সিন্ডিকেট। কলকাঠি নাড়তে শুরু করেছে অপচক্র। তাদের কারসাজিতে জনগণের গত কিছুদিনের স্বস্তি ফের রূপ নিচ্ছে অস্বস্তিতে। বিব্রতকর অবস্থা তৈরি হচ্ছে সরকারের জন্য। এবারের রমজানে দেশের মানুষ যে বাজার দেখেছে, সহনীয় মূল্যে নিত্যপণ্য পেয়েছে- তা ছিল এক চমৎকার অভিজ্ঞতা। নিকট অতীতে এমনটা দেখা যায়নি। এ সুখকর অবস্থা তৈরি হয়েছিল ফল-ফসলের ভালো উৎপাদন, বাধাহীন সরবরাহ এবং পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে, অন্তর্বর্তী সরকারের সব বিভাগ ও সংস্থার তদারকি, জবাবদিহির প্রাণান্ত প্রচেষ্টায়। সড়ক-মহাসড়কে চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য ছিল না। বাজারে কারসাজি করার কালো বিড়ালগুলো গা-ঢাকা দিয়ে ঘাপটি মেরে ছিল। পাশাপাশি ক্রেতাস্বার্থ রক্ষায় ভোক্তা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ব্যাপকভাবে প্রশংসনীয় তৎপরতা চালান। এসবেরই সার্বিক সুফল ভোগ করে জনগণ। স্বৈরাচার পতনের আট মাস পর, অন্তর্বর্তী সরকার যখন রাষ্ট্র সংস্কার, জাতীয় ঐকমত্য, নির্বাচন ইত্যাদি অতিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যতিব্যস্ত, বাজার সিন্ডিকেট আবার কলকাঠি নাড়তে শুরু করেছে। তারই আলামত লক্ষ করা যাচ্ছে বাজারে। যেমন কৃষকরা পিঁয়াজ উৎপাদন করে বাজারে ছেড়ে দিয়েছে। এখন এর দাম বাড়ার কোনো সংগত কারণ নেই। অথচ পক্ষকালের ব্যবধানে কেজিপ্রতি মূল্য ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। দাম বেড়েছে প্রায় সব সবজির। সরকার সয়াবিন তেলের দাম বাড়িয়েছে। সেই তেল বাজারে আসার আগেই খুচরা ব্যবসায়ীরা ক্রেতার পকেট কাটা শুরু করে দিয়েছেন। অন্যদিকে বড় ব্যবসায়ীরা মজুত বাড়িয়ে, সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। চিরকালের ধারাবাহিকতায় কৃষক বঞ্চিত হয়েই চলেছেন, ক্রেতাদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি দামের মাশুল, জনমনে অস্বস্তি দানা বাঁধছে। বিব্রতকর ইমেজ ক্ষুণেœর ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে সরকারকে। এ অবস্থা অবিলম্বে শক্ত হাতে দমন করা দরকার। কৃষকের ন্যায্যমূল্য পাওয়া এবং সাধারণ ভোক্তাস্বার্থ রক্ষায় বাজার ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত সরকারের সব সংস্থার অধিকতর সচেতনতা, সক্রিয়তা, তদারকি ও জবাবদিহি প্রয়োজন। অবিলম্বে সিন্ডিকেট ভেঙে, বাজারে জনগণের স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য রক্ষা তাদের দায়িত্ব।