চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুর গ্রামের আব্দুল আখের আলীর ছেলে আশিক ইকবাল আব্দুল কারিম ওরফে আশিক চাকরির পেছনে না ছুটে জৈব সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।
এখন তিনি একটি জৈব সার কারখানার মালিক। নিজের প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে তুলেছেন মুনলাইটার মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিডেট নামের এই জৈব সার কারখানা। যার নাম তাসনিম জৈব সার।
আশিক পল্লী উন্নয়ন একাডেমী-আরডিএ-বগুড়া থেকে ট্রাইকো কম্পোস্ট (জৈব সার) উৎপাদনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করার পর ২০২৩ সালে নিজেই জৈব সার তৈরি শুরু করেন। তার জৈব সার কারখানায় প্রতি মাসে ১০ টন জৈব সার উৎপাদন করেন তিনি। বর্তমানে ২ ধরনের ট্রাইকো কম্পোস্ট ও ভার্মি কম্পোস্ট জৈব সার নিয়মিত উৎপাদন করছেন তিনি। এই সার এখন চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাঁওগা, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
আশিকের মালিকানাধীন তাসনিম জৈব সার কৃষি মন্ত্রণালেয় মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট বিভাগীয় গবেষণাগার, রাজশাহী থেকে পরীক্ষিত। এদিকে অল্প সময়ের ব্যবধানে উদ্যোক্তা আশিকের জৈব সার কারখানাতে ৭ জন শ্রমিক-কর্মচারীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এখানে কাজ করে তারা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছেন। এসব শ্রমিকদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ ও ১ জন নারী শ্রমিক রয়েছেন। তবে শ্রমিক থাকলেও তিনি নিজেও তাদের সঙ্গে শ্রম দিয়ে থাকেন।
উদ্যোক্তা আশিক ইকবাল বলেন, সংসারে অর্থের অভাবে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া শেষে আমি ছোট-খোট কোন চাকরি না পেয়ে পরিবারে স্বচ্ছলতা আনতে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতাম। পরে সেই রাজমিস্ত্রির কাজ ছেড়ে আমি জৈব সার উৎপাদন করতে শুরু করি। আমার স্বপ্ন ছিল নিজে কর্মঠ হওয়া এবং বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার। বর্তমানে আমার সেই স্বপ্ন কিছুটা হলেও সার্থক হয়েছে। আগামীতে তিনি ভোকেশনাল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিবেন।
তিনি আরও বলেন, কীটনাশক থেকে মুক্তি পেতে, জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে জৈব সারের বিকল্প নেই। তাই সরকারের সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে কাজ করতে পারতেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নয়ন মিয়া বলেন, তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা আশিক ইকবালের জৈব সার গুণগতমান পরীক্ষা করা হয়েছে এবং সারের গুণগত মান সঠিক আছে। জৈব সার বিষয়ে তাকে সঠিক পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হবে বলেও জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/তানিয়া