নোয়াখালী থেকে পাচারের উদ্দেশ্যে রাখা ৪২৫টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে উপকূলীয় বন বিভাগ। এর মধ্যে ৩২৫টি জীবিত ও ১০০টি মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। শুক্রবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার মণ্ডলপাড়ায় লোকনাথ মন্দিরসংলগ্ন একটি পরিত্যক্ত ঘরে অভিযান চালিয়ে এসব কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত অভিযানে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট ও স্থানীয় বন বিভাগের স্বেচ্ছাসেবীরা অংশ নেন।
বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার হওয়া কচ্ছপের মধ্যে ২৫টি আজ শনিবার দুপুরে বন বিভাগের স্থানীয় পুকুরে অবমুক্ত করা হয়েছে। বাকি কচ্ছপগুলো দেশের বিভিন্ন পুকুর ও জলাশয়ে এবং টাঙ্গাইলের মধুপুরের জাতীয় উদ্যানে কচ্ছপের প্রজননকেন্দ্রে অবমুক্ত করা হবে। এ ছাড়া গবেষণার কাজে মৃত কচ্ছপগুলো ব্যবহার করা হবে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্র নোয়াখালীর বিভিন্ন এলাকা থেকে কচ্ছপ সংগ্রহ করে পাচারের চেষ্টা করছিল। বিষয়টি বন বিভাগ জানার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়।
নোয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবু ইউসুফ জানান, কচ্ছপ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ অনুযায়ী সুরক্ষিত প্রাণী।
এ প্রাণী শিকার, হত্যা, সংগ্রহ বা পাচার নিষিদ্ধ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে কচ্ছপগুলো উদ্ধার করা হয়। নোয়াখালীর কেউ জড়িত থাকলে কঠোর শাস্তি হবে। জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলবে।
পাশাপাশি অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা পাচারের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান এ বন কর্মকর্তা।
জানা যায়, শুক্রবার রাতে উদ্ধার হওয়া কচ্ছপগুলো ধুম, সন্ধি, করি কাইট্টা ও হলুদ কাইট্টা প্রজাতির। এই চার প্রজাতিই বাংলাদেশে প্রায় বিলুপ্ত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কচ্ছপ জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কচ্ছপের সংখ্যা কমে গেলে পরিবেশের ওপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ