চিটগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের আহ্বায়ক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের বাড়তি ট্যারিফ নিয়ে শীঘ্রই বন্দর ব্যবহারকারী ও সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে বৈঠক আয়োজন করা হবে। ইতিমধ্যে এই ব্যাপারে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যানও সম্মতি দিয়েছেন। সেখানে সবার সাথে আলোচনা করে বাস্তবসম্মত ট্যারিফ ঠিক করা হবে।
বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের সিটি কনভেনশন হলে চট্টগ্রাম পোর্ট ইউজার্স ফোরামের এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা জানান।
বন্দর ট্রাফিক ও চিটাগাং চেম্বারকে জবাবদিহিমূলক এবং ব্যবসায়ীবান্ধব করার প্রত্যয়ে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় আমীর হুমায়ুন বলেন, ‘প্রথম সভায় আলটিমেটাম দেওয়ার পরে বন্দরের চেয়ারম্যান স্বপ্রণোদিত হয়ে মন্ত্রণালয়ে লিখে ট্রাক, প্রাইমমুভার, ট্রেইলার, গেইট ফি খাতে বর্ধিত ট্যারিফ স্থগিত করেছেন। আমরা চাইনি চট্টগ্রাম বন্দরের কোনো ক্ষতি হোক। মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমরা চিঠি দিয়েছি। উনি একটি পক্ষকে আমাদের সাথে আলাপ করার জন্য নিযুক্ত করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল বন্দর চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করেছি। বন্দরের চেয়ারম্যান সম্মত হয়েছেন যে উনারা বন্দর ব্যবহারকারী, ক্ষতিগ্রস্ত, স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে ১০-১৫ দিনের মধ্যে বৈঠকে বসবেন। বৈঠকে উনারা ঠিক করবেন কোনটা যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত ট্যারিফ। আমরা চেষ্টা করবো সরকারের সঙ্গে বোঝাপড়া করে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত ট্যারিফ যাতে নির্ধারণ করতে পারি। আশা করি সরকার ব্যবসায়ীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেবে।’
সভার প্রধান বক্তা ব্যবসায়ী নেতা মোহাম্মদ আমিরুল হক বলেন, ‘আপনারা শুনে লজ্জিত হবেন খুবই দুঃখজনক মহাসড়কে একটা স্কেলের জন্য চট্টগ্রাম থেকে মিরসরাই পাথর, কয়লা যায় না। মোংলা বন্দর থেকে ট্রাকে মিরসরাইর ইকোনমিক জোনে কয়লা পাথর আসে। তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই দুর্ভোগ আমাদের দিয়ে গেছে।’
শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক শাহেদ সরওয়ার বলেন, ‘বন্দরের ট্যারিফ ৪১ শতাংশ বেড়েছে প্রচার করলেও কোনো ক্ষেত্রে ৩’শ শতাংশও বেড়েছে। আগে যেখানে ৩৭১ ডলার দিতাম, এখন ১৫০০ ডলার দিতে হচ্ছে। ব্যাপারটা অ্যালার্মিং।’
বারভিডার সাবেক সভাপতি হাবিবুল্লাহ ডন বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর আমদানি-রপ্তানির লাইফলাইন। সম্প্রতি বন্দরের সেবার ওপর যেভাবে ট্যারিফ বাড়ানো হয়েছে তাতে ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। চট্টগ্রাম চেম্বারে এক বছর ধরে প্রশাসক। সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য শক্তিশালী চেম্বার দরকার।’
সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, ‘বন্দরের গলা কাটা ট্যারিফ বন্ধে সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশন চার ঘণ্টার কর্মবিরতি করেছিল, যানবাহন ও প্রবেশ ফি বন্ধের দাবি মেনে নিয়েছে। বন্দরের নতুন ট্যারিফ শিডিউল নিয়ে আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের আলোচনা হবে।’
নাসিরুদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিজিএমইএর পরিচালক এমএ সালাম, চিটাগাং চেম্বারের সাবেক সভাপতি সরওয়ার জামাল নিজাম, পোর্ট ইউজার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী চৌধুরী, বিজিএপিএমই’র প্রথম সহসভাপতি শহীদুল্লাহ্ চৌধুরী, বিজিএপিএমই’র উপদেষ্টা লতিফুর রহমান আজিম, টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির উপদেষ্টা বেলায়েত হোসেন ও সভাপতি আবদুল মান্নান, টায়ার টিউব ডিলার গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান, চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মহিউদ্দিন, চট্টগ্রাম বন্দর মেরিন কনট্রাকটর অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি দোস্ত মোহাম্মদ, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, সেন্ট্রাল প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলম টিটু, ফিনলে স্কয়ার ব্যবসায়ী সমিতির মিয়া মো. খালেদ, ব্যবসায়ী নেতা এরফান উদ্দিন খোকনসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত