পদ্মা যমুনা কালিগঙ্গা নদী অব্যাহত ভাঙনে মানিকগঞ্জের তিনটি উপজেলার শতশত পরিবার ভাঙনের শিকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এর মধ্যে যমুনা নদীর ভয়াবহ ভাঙনের পাটুরিয়া ফেরিঘাটসহ বেশকিছু বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
অনেকেই বসভিটা থেকে বাড়িঘর সরিয়ে নিয়ে গেছে। দৌলতপুর উপজেলায় ১ হাজার ৫৯১টি পরিবার ভাঙনেরর শিকার হয়েছে বলে জানা যায়। দৌলতপুর উপজেলার ভেরেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন তলা ভবনটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের শিকার হয়ে অনেকেই অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে হরিরামপুর, শিবালয় ও দৌলতপুর উপজেলার নদীর তীরবর্তী কয়েক হাজার পরিবার।
স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী তীরে ড্রেজার বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তাদের দাবি, নদী তীরবর্তী এলাকায় বালু উত্তোলন বন্ধ হলে ভাঙন অনেকাংশে কমে যাবে। ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিবালয়ের উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের আলোকদিয়া,কানাইদিয়া,জাফরগঞ্জ,নিহালপুর ও শিবালয় ইউনিয়নের চরশিবালয়, ছোটআনুলিয়া, অন্বয়পুর, ঝড়িয়ারবাগ,দাসকান্দি, নয়াকন্দি, বেশী ঝুঁকি পূর্ণ হয়ে পড়েছে।
শিবালয় উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানান,যমুনা নদীর ভাঙনে ইতিমধ্যে ৬ টি পরিবারের বাড়ী ঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।সড়িয়ে নেওয়া হয়েছে ২২টি পরিবারের বাড়ীঘর। এছাড়া পাটুরিয়া ফেরিঘাট ভাঙনের শিকার হয়েছে।ঝুঁকিতে রয়েছে ফেরিঘাটের আশপাশের এলাকা।দৌলতপুর উপজেলার অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চরকাটারি, বাচামারা,বাঘুটিয়া,বাশাইল,রাহাতপুর,জিয়ানপুর, আবুডাঙ্গা, রামচন্দ্রপুর এলাকায় যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনে ১ হাজার ৫৯১ জন পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে। এসব পরিবারের সহায়তার জন্য ত্রাণ ও পূর্ণবাসন অধিদপ্তরে তালিকা পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে সহায়তা প্রদান করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, পদ্মা ও যমুনার বিভিন্ন ভাঙন এলাকায় আমরা কাজ করছি। প্রতদিনই নতুন নতুন এলাকায ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকায় ভাঙনরোধে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জেলা প্রশাসক (যুগ্ন সচিব) ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লাহ জানান, নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলোকে চাল ও শুকনো খাবার দেওয়া হয়েছে। যেসব পরিবার ভিটেমাটি হারিয়েছে, তাদের ঘর নির্মাণের জন্য টিন সরবরাহ করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম