নাটোর সদর হাসপাতালের নার্সদের অসদাচরণের কারণে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে বলে অভিয়োগ উঠেছে। সেই সাথে টয়লেটের শোচনীয় অবস্থা আর চিকিৎসা সরঞ্জামের অপ্রতুলতার কারণে সেবাগ্রহীতাদের দুর্ভোগ চরমে। প্রতিদিনই সদর হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারে দেখা যায় সেবাগ্রহীতাদের ওপচে পড়া ভিড়। কিন্তু টিকিট কাটলেও দেখা মেলে না কাঙ্ক্ষিত সেবার।
এসব কারণে সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তির সাথে সাথে দুর্ভোগ পোহাতে হয় সেবাগ্রহীতাদের সাথে আসা সাহায্যকারীদেরও।
ছাতনী আগদিঘা থেকে আসা আল আমিন জানান, তার বাবা বৃদ্ধ মোতলেব আলীকে সেই সকাল ৮টার সময় সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ডাক্তার দেখালে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে বলেন। ভর্তি করানোর পর প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ নিয়ে এসে কর্তব্যরত নার্সকে দিলে তিনি রেখে দেন। কিন্তু অনেকক্ষণ পরেও ইনজেকশন না দিলে নার্সকে তাগাদা দিলে তিনি মেজাজ গরম করে কর্কশ ভাষায় বলেন, যখন আমার সময় হবে তখন দিবো। এরপরে রাগারাগি করলে নার্স এসে বাজে ব্যবহার করে ইনজেকশন দেন।
আল-আমিন বলেন, আমরা তো সদর হাসপাতালে আসছি সেবা পাওয়ার জন্যে। আমাদের সাথে ভালো ব্যবহার করলে নার্সদের কী ক্ষতি হয়?
এছাড়াও গুরুদাসপুর থেকে আসা রফেজান বেওয়া জানান, তিনি তার ছেলের সাথে আসছেন ডাক্তার দেখাতে। দুপুর সাড়ে বারোটা বাজে। ডাক্তারের চেম্বারে যে ভিড় কয়টা যে বাজবে আল্লাহ জানেন।
এদিকে, সরেজমিন সদর হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচ তলায় টয়লেটে গিয়ে দেখা যায় সেখানে পানির লাইনও বন্ধ। আবার পানির ট্যাপ, বদনা ইত্যাদি কিছু নাই। সেবাগ্রহীতারা জরুরি কাজ সারার জন্য এসে এভাবেই টয়লেট সারছেন।
নার্সদের অসদাচরণের ব্যাপারে নার্সিং সুপারভাইজার নাজমা আক্তার বলেন, নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নীত হওয়ায় রোগীর চাপ যে হারে বেড়েছে, সে তুলনায় নার্সের সংখ্যা কম। ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল থাকা অবস্থায় ৭০ জন নার্স কর্মরত ছিলেন। সে অনুযায়ী বর্তমানে নার্সের সংখ্যা বাড়ে নাই। অতিরিক্ত চাপের কারণে হয়তোবা নার্সরা মেজাজ হারিয়ে ফেলছেন। তবে তাদের সেবাগ্রহীতাদের সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মশালার ব্যবস্থা করা হবে বলে।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন ও নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মোক্তাদির আরেফিন জানান, সেবাগ্রহীতাদের সাথে ভালো ব্যবহারের জন্য নার্সদের পরামর্শ দেওয়া হয়। তারপরও গুরুতর অভিযোগ থাকলে সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে। আর টয়লেটের শোচনীয় অবস্থা দূরীকরণে কাজ চলমান আছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই