ভেজাল খাদ্য গ্রহণের জন্য ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, কিডনি ডিজিস, থ্যালাসেমিয়াসহ বিভিন্ন মরণব্যাধি রোগ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ব্যবসায়ী একজন ভোক্তাও। তিনিও এ সকল রোগ থেকে রক্ষা পান না। খাদ্যে ভেজাল দেওয়া মারাত্মক অপরাধ, এটা একজন ব্যবসায়ীর জানতে হবে।
শনিবার বরিশাল সার্কিট হাউজের সভা কক্ষে ‘ভোক্তা-স্বার্থ রক্ষায় বিদ্যমান চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন এ কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপ-পুলিশ কমিশনার মো. শরফুদ্দীন। এ সময় সেনাবাহিনীর সিইও লে. কর্নেল মেহেদী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাসুম বিল্লাহ, র্যাব-৮ এর সহকারী পরিচালক (অপারেশন অফিসার) অমিত হাসান উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, ভোক্তা-স্বার্থ সংরক্ষণে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সকলের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আইনের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের জনবল বাড়ানোসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে কার্যকর প্রচারণা বৃদ্ধি করতে হবে। স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক বার্তা ছড়ানো প্রয়োজন। বাজারে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর মনিটরিং দরকার।
একই সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মধ্যে নৈতিকতা ও সামাজিক দায়বদ্ধতা তৈরি করতে হবে। পণ্যে ভুল তথ্য দেওয়া, দাম বাড়িয়ে বিক্রি, ভেজাল দেওয়া—এসব যেন লজ্জার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়, এমন একটা সামাজিক রীতি গড়ে তুলতে হবে। দায়িত্বশীল ও স্বচ্ছ ব্যবসা সংস্কৃতি গড়তে হলে পারিবারিকভাবে সুশিক্ষিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠীও দরকার।
উন্মুক্ত আলোচনায় সকলের উদ্দেশ্যে জানানো হয়, চটকদার বিজ্ঞাপন দেখে আকৃষ্ট না হয়ে পণ্য ও সেবা ক্রয়ের পূর্বে দেখে শুনে বুঝে ক্রয় করা একজন সচেতন ও দায়িত্বশীল ভোক্তার পরিচয়। ভোক্তা অধিকার আইন ‘২০০৯’ ব্যবসায়ী ও আপামর জনগণকে অবগত করা। এতে ভোক্তারা তাদের অধিকার সম্পর্কে জানবেন। ব্যবসায়ীরাও ভোক্তা-অধিকার বিরোধী কার্য, অপরাধ ও দণ্ড সম্পর্কে সচেষ্ট হবে। সকলের খাবার, পণ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে নিজেকেই সচেতন, দায়িত্বশীল এবং সাহসী হতে হবে। সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করলেই গড়ে উঠবে এক সুরক্ষিত ও ন্যায্য ভোক্তা সমাজ।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল