খাগড়াছড়ি জেলা সদরের একটি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী মেঘলা (ছদ্মনাম)। বয়স মাত্র ১৫ বছর ৯ মাস। অথচ তার বিয়ের দিন ধার্য ছিল আগামী সোমবার আর গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান রবিবার।
বিয়ের সব আয়োজন প্রায় সম্পন্ন- অতিথিদের দাওয়াত দেওয়া হয়ে গেছে, প্যান্ডেলও প্রস্তুত। বর ইদুল হাসান (২৯), পেশায় সবজি ব্যবসায়ী, থাকেন চট্টগ্রামের বারৈয়ারহাটে। কনের বয়স প্রাপ্ত না হলেও উভয় পরিবার বিয়েতে সম্মত ছিল।
তবে এই বাল্যবিয়েতে বাধা হয়ে দাঁড়ান খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায়। শুক্রবার দুপুরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে তিনি জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুস্মিতা খীসা ও সদর থানা পুলিশের সহায়তায় উত্তর গঞ্জপাড়া এলাকায় অভিযান চালান।
অভিযানে গিয়ে দেখা যায়, বর ও কনের বাড়ি পাশাপাশি। বাড়িতে উৎসবমুখর পরিবেশ, রান্নার সরঞ্জাম এসে গেছে। কনের জন্মসনদ যাচাই করে বিয়ের আয়োজনের সত্যতা পান ইউএনও।
কনে মেঘলা জানান, সে এই বিয়ে করতে চায় না; বরং সে আরও পড়াশোনা করতে চায় এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। উভয় পরিবার নিজেদের ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন কাজ না করার মুচলেকা দেয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুজন চন্দ্র রায় পরে বর ও কনের পিতাকে ১০ হাজার টাকা করে মোট ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
তিনি বলেন, নিজেদের অপরাধ স্বীকার করায় প্রাথমিকভাবে মুচলেকা নেওয়ার পাশাপাশি অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মেঘলা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগেই যেন আর বিয়ের চেষ্টা না করা হয়, সেজন্য স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের নিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ