গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে জামায়াত নেতা ও ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম হত্যার মূলহোতা রিফাত মন্ডল সৌরভকে (১৬) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেইসঙ্গে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু ও ব্যবসায়ীর ব্যবহৃত দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতার রিফাত মন্ডল সৌরভ উপজেলার নাকাই ইউনিয়নের শিতলগ্রাম এলাকার সামিউল ইসলামের ছেলে। তিনি স্থানীয় নাকাইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। নিহত নজরুল ইসলাম (৩৪) ওই এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। তিনি মুদির দোকানের পাশাপাশি বিকাশ, নগদ ও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতেন এবং ওই ইউনিয়নের শীতলগ্রাম ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর অঙ্গ-সংগঠনের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন।
সোমবার দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ থানার হলরুমে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম।
প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়, নিহত নজরুল ইসলাম মুদি দোকানের পাশাপাশি বিকাশ, নগদ ও ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা করতেন। প্রতিদিনের ন্যায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে দোকান বন্ধ করে। পরে রবিবার সকালে ওই গ্রামের বাগুরার বিলের ধারে নজরুলের গলাকাটা লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এরই ধারাবাহিকতায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গাইবান্ধা জেলা শহরের নিউ মেরিট কেয়ার কোচিং সেন্টারের আবাসিক রুম থেকে ঘটনার সাথে জড়িত রিফাত মন্ডল সৌরভকে গ্রেফতার করে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ। গ্রেফতার রিফাতকে জিজ্ঞাসাবদের একপর্যায়ে সে একাই নজরুলকে হত্যা করেছে স্বীকার করে।
ওসি বলেন, রিফাত মন্ডল সৌরভ নজরুলের দোকানের নিয়মিত ফ্লেক্সিলোডসহ বিকাশ লেনদেনের নিয়মতি কাস্টমার ছিল। ওই দোকানে রিফাতের ফ্লেক্সিলোডের ১ হাজার ১০০ টাকা বাকি ছিল। ঘটনার প্রায় দেড় মাস আগে রিফাতসহ তার ২ জন সহযোগী মিলে নজরুলের দোকান ঘর চুরি করে। এ চুরির ঘটনায় আটক হলে স্থানীয় লোকজন রিফাতকে মারপিট করে এবং ৬০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। এরই জের ধরে রিফাত দোকানি নজরুলের ক্ষতি করার সুযোগ খুঁজতে থাকে।
একপর্যায়ে শনিবার (১৬ আগস্ট) দিবাগত রাতে গ্রেফতার রিফাত দোকানি নজরুলকে ফোন করে বাকি ১ হাজার ১০০ টাকা ফেরত দেবে জানায়। এরপর নজরুল দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফেরার পথে কানীপাড়াগামী এলাকায় পৌঁছালে সেখান থেকে তারা দুজনেই কথা বলতে বলতে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে রিফাত ক্লোরোফোম মিশানো রুমাল দিয়ে নজরুলের মুখ চেপে ধরে। এসময় নজরুল অজ্ঞান হয়ে পড়লে রিফাত ধারালো ছুরি দিয়ে নজরুলের গলা কেটে হত্যা করে এবং নজরুলের বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের ২টি মোবাইল নিয়ে নেয়।
এরপর রিফাত পাশের এক পুকুরে হত্যার কাজে ব্যবহৃত ছুরি ফেলে দেয় এবং বিকাশ ও ফ্লেক্সিলোডের ১টি মোবাইল আরেকটি পুকুরে ফেলে দিয়ে অন্য মোবাইলটি নিয়ে গোবিন্দগঞ্জ সরকারি মসজিদ মার্কেটের বারান্দার ছাউনির উপর ফেলে রেখে তার কোচিং সেন্টারে চলে যায়। সেখান থেকে আজ সোমবার ভোরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, আইনানুগ প্রক্রিয়া শেষে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই