আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এ সময় প্রায় ৩০টি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
আজ সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, বিগত ইউপি নির্বাচন ও সালিশে নেতৃত্বে দেয়া নিয়ে বিজয়নগর উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের খাদুরাইল গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে।
এক পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন ইছাপুরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেনের ভাই মোশারফ হোসেন, ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আমিনুল ইসলাম এবং উপজেলার যুবদলের বহিষ্কৃত সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সী।
অপরপক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক রায়হান শ্রাবণ ও স্থানীয় গিয়াস উদ্দিন। আধিপত্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে।
পূর্ব বিরোধের জেরে গত রবিবার রাতে দুই পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সে সময় বহিষ্কৃত যুবদল নেতা লিটন মুন্সীসহ উভয়পক্ষের ১২টি বাড়িঘরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
সোমবার সকাল নয়টার দিকে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, রামদা, বল্লম, ছুরি, লাটিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে থেমে থেমে বিকেল তিনটা পর্যন্ত সংর্ঘষ হয়। সংঘর্ষ চলাকালে যুবদল নেতা শফিক রায়হান, তার দুই ভাই জহিরুল ইসলাম ও তাজুল ইসলামের ঘরসহ প্রায় ১৮টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাধনা ত্রিপুরা ঘটনাস্থল পৌঁছান। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে যৌথবাহিনী এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংঘর্ষস্থল থেকে রুবেল মিয়া (৩৮), শাকিল মিয়া (২২), মধু মিয়া (৩৫) ও হাবিবুর রহমান (৪২)কে আটক করে।
আহতরা হলেন, আমসু মিয়া (২৪), আকবর মিয়া (৫০), বকুল মিয়া (২৮), মোনায়েম খাঁ (৩৭), রঙ্গু মিয়া (৩৮), মনির হোসেন (৩৫), তোফাজ্জল মিয়া (৩৫), সাইফুল ইসলাম (২৫), মরম ইসলাম (৩৫), জাকির হোসেন (৩৩), লিটন মিয়া (৩৩), আতিক মিয়া (২৫), রহিছ মিয়া (৫৫), মহরম আলীর স্ত্রীর(২৮)।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আধিপত্য বিস্তার ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম মেম্বার ও শফিক রায়হন শ্রাবনের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ