এক দশকেও আলোর মুখ দেখেনি রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ। এখনো চলছে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম। তাতেও রয়েছে নানা সংকট। ছাত্রাবাস, ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, হলরুমসহ নেই পর্যাপ্ত শিক্ষকও। অন্যদিকে স্থায়ী ক্যাম্পাসের জমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ হলেও ঝুলে আছে ডিপিপি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একনেকে অনুমোদন না পাওয়ার কারণে অদৃশ্য রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ নির্মাণের স্বপ্ন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে করোনারি কেয়ার ইউনিট ভবনের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শুরু হয় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের যাত্রা। সে থেকে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকলেও স্থায়ী ক্যাম্পাসের মুখ দেখেনি শিক্ষার্থীরা। তাই নানা জঠিলতার কারণে ঘুড়ে দাঁড়াতে পারেনি কলেজটি।
তবে এরই মধ্যে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে শেষ হয়েছে ১০টি এমবিবিএস ব্যাচ। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের ১১ নম্বর ব্যাচের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকলেও শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে না পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা। ছাত্রাবাস, ল্যাব, শ্রেণিকক্ষ, হলরুমসহ পর্যাপ্ত শিক্ষক সংকটের মধ্যে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরও স্থায়ী ক্যাম্পাস চালু না হওয়ায় ক্ষোভ বেড়েছে শিক্ষার্থীদের।
রাঙামাটি মেডিকেলের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্ণব চাকমা বলেন, অবকাঠামোগত সমস্যা রয়েছে মেডিকেল কলেজে। কারণ আমরা একটি অস্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস করছি। একসঙ্গে ৫টি ব্যাচ ক্লাস করার মতো পর্যাপ্ত শ্রেণিকক্ষ নেই। একটা ব্যাচ ক্লাস করলে আরও একটি ব্যাচকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছেলে-মেয়েদের আবাসন ব্যবস্থা খুবই নাজুক। তাই আমরা শিক্ষার্থীরা মিলে স্থায়ী ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছি।
অন্যদিকে, রাঙামাটির রাঙাপানি মৌজার সুখীনীলগঞ্জন এলাকায় রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ২৬ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়। জমির পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তৈরি করা হয় নকশাও। সবকিছু সম্পন্ন করা হলেও একনেকে এখনো অনুমোদন হয়নি ডিপিপি।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক প্রীতি প্রসূন বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের অস্থায়ী ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া খুবই কষ্টের। ১৬টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন। কিন্তু আছে মাত্র ৫টি। সুযোগ-সুবিধা না থাকার কারণে এখানে শিক্ষকও থাকতে চায় না। শিক্ষক আছেন ৭৭ জন। এর মধ্যে এমবিবিএস কোর্স শেষ করেছেন ১৮০ জন শিক্ষার্থী। প্রতি সেশনে নতুন করে ভর্তি হচ্ছে ৭৫ জন শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা পড়া লেখা চালিয়ে নিলেও মেধার বিকাশ হচ্ছে না এখানে। কারণ এখানে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারছে না। পরিপূর্ণ হাসপাতাল না থাকলে ইন্টার্ন করা সম্ভব না।
বিডি প্রতিদিন/এমআই