নেত্রকোনার কলমাকান্দা সীমান্তের দেড় কিলোমিটার সড়ক যেন চাষের জমি। বর্ষা মৌসুমে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায় সড়কটি। তখন আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ চলাচলে চরম ভোগান্তির শিকার হন। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা গ্রামীণ এ সড়কটি পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তার আর বাস্তবায়ন হয়নি। এবার এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘবে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ^াস দিয়েছে স্থানীয় সরকারের প্রকৌশলী অধিদপ্তর ও কলমাকান্দা উপজেলা প্রশাসন। সরেজমিন দেখা যায়, সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার উত্তর লেঙ্গুরা থেকে লোহাগাঁও, রঘুনাথপুর, শিবপুর এবং রাজানগর হয়ে নাজিরপুর দুর্গাপুরের সঙ্গে মিলিত প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কে চিরচেনা দুর্ভোগ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলেও পাহাড়ি এই এলাকায় তার আঁচ লাগেনি। প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এলাকার মানুষের জন্য এখন অভিশাপ।
ষাটোর্ধ্ব আবু সিদ্দিক জানান, আত্মীয়স্বজনসহ কোনো মানুষ একবার ওই এলাকায় গেলে আর যেতে চান না। বর্ষার সময় পাহাড়ি এ এলাকায় আসেন না পর্যটকও। প্রতি বোরো মৌসুমে বেকায়দায় পড়েন এ অঞ্চলের কৃষকসহ গাড়িচালকরা। স্কুল-কলেজে যেতে বিড়ম্বনার শিকার হন শিক্ষার্থীরা। ট্রাক্টরচালক রফিকুল ইসলাম জানান, এটি দেশের বিচ্ছিন্ন একটি এলাকা। ভোটের সময় শুধু জনপ্রতিনিধিরা দেখেন আর আশ^াস দেন। কাজের কাজ কিছুই হয় না। চার-পাঁচ গ্রামের মানুষের বাকি জীবন মনে হয় এভাবেই কেটে যাবে। তিনি বলেন, কাদায় প্রায়ই গাড়ি আটকে যায়। গ্রামের মানুষের সহায়তায় টেনে তুলতে হয়। একবার কোনো চালক এ রাস্তায় এলে পরেরবার আর আসতে চান না।
এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের ক্যাপাসিটি মোড় থেকে ৩ দশমিক ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে ২ দশমিক ৩৫ কিলোমিটারে উন্নয়ন কাজ চলমান। এর মধ্যে ৭৯০ মিটার আরসিসি এবং ১৫৬০ মিটার বিটুমিনাস কার্পেটিং করা হবে। বাকি ৯০০ মিটার পুরো কাঁচা।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী মমিনুল ইসলাম বলেন, এটি লেঙ্গুরা ইউনিয়নের কানেক্টিং একটি রোড। ইতোমধ্যে অনেক অংশের কাজ হয়েছে। কিছু জায়গায় কালর্ভাটসহ কাজ করতে হবে। কাঁচা অংশটুকো দ্রুত উন্নয়ন প্রকল্পভুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
কলমাকান্দার ইউএনও ফাইযুল ওয়াসীমা নাহাত জানান, এ উপজেলাটি হাওরবেষ্টিত। এখানের রাস্তগুলো বছরের বড় একটা সময় পানির নিচে থাকে। ফলে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। অপ্রতুল বরাদ্দ থাকায় সব কাজ একসঙ্গে করা যায় না। ধাপে ধাপে করার চেষ্টা চলছে।