ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’। চার বছরে ২০০ বেওয়ারিশ লাশ দাফন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তারা। সব শেষ ২৪ জুন কসবা উপজেলা থেকে উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৫০ বছর বয়সি এক নারীর লাশ দাফনের মধ্য দিয়ে সংখ্যা ২০০-এর ঘরে পৌঁছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পূর্ব মেড্ডা সার গুদামের পাশে তিতাস নদীর পাড় সংলগ্ন স্থানে বেওয়ারিশ লাশ কবর দেওয়া হয়। জায়গাটি নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে পানি ওঠে। তখন দাফন করতে বেগ পেতে হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার মধ্যপাড়ার তরুণ প্রকৌশলী আজহার উদ্দিন ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর’ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনিই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। এ সংগঠনে রয়েছেন এক ঝাঁক তরুণ। মহামারি করোনাকাল থেকে তাদের কার্যক্রম শুরু। জেলার যেখানেই বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া যায় স্বেচ্ছাসেবীরা ছুটে যান সেখানে। পুলিশের সহায়তায় লাশ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে তারা দাফনের ব্যবস্থা করেন।
লাশ শেষবারের মতো গোসল করানো, কাফনের কাপড়, বাঁশ, চাটাই-দাঁড়ি, কবর খনন, জানাজা সবকিছুই করেন তারা। যেভাবেই মৃত্যু হোক, কোনো বেওয়ারিশ লাশ দাফনে তারা পিছপা হন না। তাদের এ কর্মকাণ্ডে খুশি শহরবাসী। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট-ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবদুন নূর বলেন, বেওয়ারিশ লাশ দাফন মানবিক কাজ। বাতিঘর এ প্রশংসনীয় কাজ করছে। বাতিঘরের প্রতিষ্ঠাতা আজহার উদ্দিন বলেন, আমরা শুধু বেওয়ারিশ লাশই দাফন করি না। মানবিক অনেক কাজ করে থাকি। ওসি মোজাফফর হোসেন জানান, দায়িত্ববোধ থেকেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাতিঘর বেওয়ারিশ লাশগুলো দাফন করে থাকে। থানায় যখনই কোনো অজ্ঞাত লাশ আসে, তখনই বাতিঘরের সঙ্গে যোগাযোগ করি।