জামায়াতে ইসলামীর মতাদর্শ নিয়ে আবারও কঠোর সমালোচনা করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী। তিনি বলেন, মওদুদীর ইসলাম আর আমাদের ইসলাম এক নয়। জামায়াতের ইসলাম মওদুদীর ইসলাম। গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জাতীয় উলামা কাউন্সিলের আত্মপ্রকাশ ও উলামা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, জামায়াত ক্ষমতায় এলে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত বাংলাদেশে থাকতে পারবে না। তারা সাহাবাদের দুশমন, নাস্তিকের চেয়েও খতরনাক (ভয়ানক)।
একই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। তিনি বলেন, এখন ইসলামি রাজনীতির সোনালি সময় চলছে। বাংলাদেশে এখন ইসলামি রাজনীতি উত্থানের সোনালি সময়। এই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারলে ভবিষ্যতে আফসোস করতে হবে। তার দাবি, আগামীর বাংলাদেশে যে কোনো জাতীয় সিদ্ধান্ত ইসলামপন্থিদের বাইরে রেখে নেওয়া সম্ভব হবে না।
নুরাল পাগলার মাজার এলাকায় হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ীতে আলেম-ইমামদের হয়রানি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মাওলানা মামুনুল হক। তিনি সতর্ক করে বলেন, রাজবাড়ীর প্রশাসন যদি দমন-পীড়ন বন্ধ না করে, জাতীয় পর্যায় থেকে এর কঠোর প্রতিবাদ করা হবে।
এর আগে গত ৮ নভেম্বর এক আলোচনা সভা ও জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে হেফাজত আমির বলেছিলেন, আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের আকিদার মূল ভিত্তি হলো কোরআন ও সুন্নাহ এবং সাহাবায়ে কিরাম ও সালফে সালেহীনের পথ অনুসরণ। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আজ কিছু ব্যক্তি ও গোষ্ঠী ইসলামের এই বিশুদ্ধ ঐতিহ্য থেকে সরে গিয়ে নতুন নতুন মতবাদ প্রচার করছে।
বিশেষ করে আবুল আলা মওদুদী তার লেখনীতে এমন কিছু ধারণা উপস্থাপন করেছেন, যা আহলে সুন্নতের মূল ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সাহাবায়ে কিরাম সম্পর্কে তার মন্তব্য এবং ইসলামি রাজনীতির ব্যাখ্যা বহু ক্ষেত্রে ইসলামের ঐতিহ্যবাহী ব্যাখ্যার বিপরীত। এ কারণে আকাবিরে দেওবন্দ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন- মওদুদী সাহেবের চিন্তা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ইসলাম কেবল একটি রাজনৈতিক মতবাদ নয়; বরং এটি আখলাক, তাযকিয়া ও ইলমে ওহির ওপর প্রতিষ্ঠিত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা।
হেফাজতের এই শীর্ষ নেতা বলেন, জামায়াতে ইসলামী সবসময় ইসলামের শেকড় উৎপাটনের মিশনে লিপ্ত। আমাদের কাছে ইসলাম এসেছে সাহাবায়ে কেরামের মাধ্যমে। মওদুদীর গোটা জীবন কেটেছে সেই সাহাবায়ে কেরামকে বিতর্কিত করার কাজে। সাহাবায়ে কেরামকে সত্যের মাপকাঠি স্বীকার না করা হলে এবং তাদের বিতর্কিত করা গেলে কোরআন ও হাদিস বিতর্কিত হয়ে যাবে। জামায়াতে ইসলামী সাহাবায়ে কেরামকে বিতর্কিত করার মাধ্যমে কোরআন ও হাদিসের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায়।