ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ২৭ নভেম্বর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে বসবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং মাঠপর্যায়ের কার্যালয়ের নিরাপত্তাসহ মোট ২৩টি ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
ইসি সূত্র জানায়, গত ২০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত প্রথম দফার বৈঠকে ১৩টি বিষয়ে আলোচনা হয়। এবার তফসিল ঘোষণাকে কেন্দ্র আরও ১০টি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। নিরাপত্তা, অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধসহ নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। এরপর তাদের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ভোটের তফসিল ও তারিখ নির্ধারণ করা হবে। বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাজেট নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা হবে। অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং ভোটের পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি।
যে ২৩ ইস্যু নিয়ে আলোচনা : অবৈধ অস্ত্র ব্যবহার রোধ ও নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ গ্রহণ। বৈধ অস্ত্র প্রদর্শনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ। মনোনয়নপত্র দাখিল হতে প্রতীক বরাদ্দ পর্যন্ত কার্যক্রম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পাদনের জন্য রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অধিক সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন। সারা দেশ থেকে পোস্টার, ব্যানার, গেট, তোরণ ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী অপসারণ। নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন-পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় নির্ধারণ।
ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তা ও নির্বাচনি এলাকা তথা সমগ্র দেশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের কার্যক্রমে সমন্বয় সাধন ও সুসংহতকরণ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও সংখ্যালঘুসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।
নির্বাচনি দ্রব্যাদি পরিবহন, সংরক্ষণ ও বিতরণে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। পার্বত্য/দুর্গম এলাকায় নির্বাচনি দ্রব্যাদি পরিবহন এবং ভোট গ্রহণ কর্মকর্তাদের জন্য হেলিকপ্টার সহায়তা প্রদান। রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং নির্বাচন কমিশনের মাঠপর্যায়ের আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের বাসস্থান এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসহ বাসস্থানের নিরাপত্তা জোরদারকরণ। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইলেকটোরাল ইনকোয়ারি কমিটির দায়িত্ব পালনকালে পুলিশ ফোর্স নিয়োজিতকরণ। নির্বাচনি আইন, বিধিবিধান প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে করণীয় নির্ধারণ।
নির্বাচনকালীন আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের পরিকল্পনা। গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের মতামত/পরামর্শের আলোকে শান্তিশৃঙ্খলাবিষয়ক কার্যক্রম গ্রহণ। নির্বাচনে বিদেশি সাংবাদিক ও প্রাক-পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা সহযোগিতা প্রদান। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ন্ত্রণ। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন ও মনিটরিং ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ। পোস্টাল ভোটিং ব্যবস্থাপনায় নিরাপত্তা প্রদান। প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে ভুল ও মিথ্যা তথ্যের প্রচারণা রোধের কৌশল নির্ধারণ। ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ।
বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে যাদেও : সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ/কোস্টগার্ড/আনসার ও ভিডিপি/ ডিজিএফআই/ এনএসআই/এনটিএমসি/র্যাবের মহাপরিচালক এবং স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি)/সিআইডি অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শককে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।