দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বশির আহমেদের মোট ৪৮ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে ৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবের ২ কোটি ১৪ লাখ টাকা ক্রোক করা হয়েছে। গতকাল বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব জানান সংস্থাটির উপপরিচালক (জনসংযোগ) আকতারুল ইসলাম। তিনি জানান, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেডের এমডি বশির আহমেদের অর্ধশত কোটি টাকারও বেশি মূল্যের অবৈধ সম্পদ খুঁজে পেয়েছে দুদক। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ড্রেজিং কোম্পানি হিসেবে দাবি করা এই প্রতিষ্ঠানের অবস্থান কারওয়ান বাজারের টিসিবি ভবনে। মূলত তারা নদী ড্রেজিং এবং বাঁধ, সেতু, সড়ক-মহাসড়কসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে কাজ করে। দুদক সূত্র জানায়, অভিযুক্ত ওই ব্যবসায়ী ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনসহ অবৈধভাবে ৫১ কোটি ৩ লাখ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন।
এর আগে বশির আহমেদের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। অভিযোগ পেয়ে ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি বশির আহমেদ ও তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের নামে অর্জিত যাবতীয় স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎসের বিস্তারিত তথ্য চায় দুদক। ওই নোটিস পেয়ে নিজের সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন বশির। তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেন দুদক উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী।
দুদক বলছে, দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে বশির আহমেদ ১৯৯০ সালের ৩০ জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত ৯০টি দলিল মূলে জমি, জমিসহ বাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রয় এবং বাড়ি নির্মাণে ৪৬ কোটি ৩১ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ দেখান। স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র, গাড়ি, কোম্পানি শেয়ার, ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং (প্রা. লি.), দি ইম্পেরো প্রপার্টিজ লি., ওয়েস্টার্ন ডেজার্ড (প্রা. লি.), ওয়েস্টার্ন ব্লক মেকিং ইন্ডাস্ট্রিজ (প্রা. লি.) ও বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআরসহ মোট ৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ থাকার কথা উল্লেখ করেন বিবরণীতে। সব মিলয়ে যা ৫২ কোটি ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৭৮৮ টাকা। তবে অনুসন্ধানে নেমে বশির আহমেদের নামে ৯২টি দলিলমূলে জমি, জমিসহ বাড়ি ও ফ্ল্যাট ক্রয় এবং বাড়ি নির্মাণসহ সর্বমোট ৪৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। স্বর্ণালংকার, আসবাবপত্র, গাড়ি, কোম্পানির শেয়ার ও বিভিন্ন ব্যাংকে এফডিআরসহ অস্থাবর সম্পদ মেলে ৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার। সেই হিসাবে ১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেন তিনি।