অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে গড়ে উঠেছে এক নতুন বাণিজ্যিক সিন্ডিকেট। যার নেতৃত্বে রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটির এক সদস্য। তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা, ভাঙচুর মামলার আসামি হয়েও দাপিয়ে বেড়চ্ছেন সচিবালয়। আলোচিত ব্যবসায়ী সালমান এফ রহমানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে আগে থেকেই নিয়মিত সচিবালয়ে যাতায়াত করার সুবাধে বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ। এখন তিনি সচিবালয়ে আসেন ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে। তার নাম কৃষিবিদ কে এস এম মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল। অভিযোগ রয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্যের নামে ফ্যাসিস্টদের স্বার্থরক্ষায় আমলাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে সরকার ও দেশের ক্ষতি করতে কাজ করছেন তিনি।
জানা গেছে, এই মোস্তাফিজুর রহমান শ্যামল ছিলেন আওয়ামী লীগের পতনের আগে ২০২৪-এর ২২ জুলাই শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত মিটিংয়ের অন্যতম সমন্বয়কারী। হাসিনার সরকার টিকিয়ে রাখতে ব্যবসায়ীদের পক্ষে জোড়ালো ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। আবার হাসিনা সরকারের পতনের পরও এখন ক্ষমতার দম্ভভরেই সচিবালয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি গত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়ে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে গণসংযোগও করেন। নৌকার টিকিট না পেয়ে ডামি প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন। এরআগে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বালেন্দা গ্রামের মাঠে শত বিঘার শস্যচিত্রের ক্যানভাসে শেখ মজিবের প্রতিকৃতি তৈরি করে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিতে এই শ্যামলের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। সেই শস্যচিত্রে বঙ্গবন্ধু জাতীয় পরিষদের সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকেয়ার গ্রুপ অব কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এই শ্যামল। তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা ও ভাঙচুরের চারটি মামলা। এত কিছুর পরও তিনি কীভাবে সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান দাপিয়ে বেড়ান, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কীভাবে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে দাপটের সঙ্গে তদবির করে বেড়াচ্ছেন? জানা যায়, সেই শ্যামল অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে অবৈধভাবে অনুমোদন নিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফেকচারার্স অ্যাসোসিয়েশেন (বামা) নামে সংগঠনের। বর্তমানে এ সংগঠনের নামে ভেঙেই করে চলেছেন নানা অপকর্ম।