গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় শুধু নীতিমালা যথেষ্ট নয়, এ জন্য জরুরি একটি কার্যকর আইন- এমন আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। বক্তারা বলেছেন, বিদ্যমান নীতিমালা কেবল কাগজে-কলমে আছে, বাস্তবে শিশু গৃহকর্মীরা প্রতিদিন নির্যাতন ও শোষণের ঝুঁকির মধ্যে বাস করছে। গতকাল রাজধানীর পুরানা পল্টনের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সেমিনারে এ আহ্বান জানানো হয়। অনুষ্ঠানটির যৌথ আয়োজন করে অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি), এডুকো ও শাপলা নীড় বাংলাদেশ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. নাজমুজ্জামান ভূঁইয়া। প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপপরিচালক সুস্মিতা পাইক, আইন কমিশনের গবেষণা কর্মকর্তা মনিরা সুলতানা, এএসডির নির্বাহী পরিচালক এম এ করিম, এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুল হামিদ, শাপলা নীড়ের ইউমি ইয়াগিশিতা মাসুদা প্রমুখ।
এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, গৃহকর্মীদের সুরক্ষা আইনে নিয়োগপত্র দেওয়ার কথা বলা আছে, কিন্তু সেটা কেউ মানে না। নতুন আইন হলে প্রয়োগ করা সম্ভব হবে, শাস্তি দেওয়া সম্ভব হবে। রাষ্ট্র যদি শিশুকে গৃহকর্মে ঠেলে দেয়, তবে তার খাবারের নিশ্চয়তাও রাষ্ট্রকে দিতে হবে।
আবুল হোসেন বলেন, শিশুশ্রম নিরসনে প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। চাইলে অনেক কিছু করা যায়, কিন্তু হয় না। কারণ গৃহকর্মীরা গরিব, তাদের জন্য জবাবদিহির প্রয়োজন মনে করা হয় না।
মনিরা সুলতানা বলেন, শত শত আইন থাকার পরও শিশু গৃহকর্মীদের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট আইন নেই। তারা নানা নির্যাতনের শিকার হলেও পরিবার বা বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না।
সুস্মিতা পাইক বলেন, গৃহকর্তা ও গৃহকর্মী উভয়ের সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। আমি আশাবাদী, শিশু গৃহকর্মীদের জন্য শিগগিরই সুনির্দিষ্ট আইন আসবে।
এম এ করিম বলেন, শিশু গৃহকর্মীদের জন্য কার্যকর আইন ছাড়া তাদের অধিকার নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। সরকারের ২০২৫ সালের মধ্যে সব ধরনের শিশুশ্রম নিরসনের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে এখনই আইন প্রণয়ন জরুরি।