আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন সারা দেশের হাজারো খামারি। দেশের বিভিন্ন গ্রামে শুধু খামারেই নয়, অনেক পরিবার ঘরোয়াভাবে গরু, ছাগল পালন করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করছে। তৃণমূল পর্যায়ে এ পশুপালন গ্রামীণ অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখছে। খামারিদের পাশে থেকে কাজ করছে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। আর হাটবাজারে শোভা পাচ্ছে নানা রকমের গরু। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর- রংপুরে এবার চাহিদা ১৫ লাখ পশুর : রংপুর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ঈদুল আজহায় রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ১৪ লাখ ১২ হাজারের বেশি পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছিল। এবার কিছুটা বেড়ে তা ১৫ লাখে দাঁড়াতে পারে। সূত্র মতে, মোট পশুর তিনভাগের এক ভাগ হচ্ছে গরু এবং দুই ভাগ হচ্ছে খাসি-ছাগল। সে হিসেবে এ বছর রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৫ লাখ গরু এবং ১০ লাখ খাসি-ছাগল কোরবানি দেওয়া হতে পারে। রংপুর নগরীর লালবাগ, বুড়িরহাটসহ কয়েকটি গরুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট সাইজের গরু ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা, মাঝারি সাইজের গরু ১ লাখ ২০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের গরু আড়াই থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় সাইজের গরুর চাহিদা খুবই কম। ছোট এবং মাঝারি সাইজের গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি।
নারায়ণগঞ্জে চাহিদা সরবরাহ সমান : পবিত্র ঈদুল আজহা তথা কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে জমে উঠতে শুরু করছে নারায়ণগঞ্জের হাটগুলো। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে স্থল ও জলপথে হাটগুলোতে গরু আসতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে খামারগুলোও বেশ জমজমাট।
জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্র বলছে, নারায়ণগঞ্জ জেলার ৫টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে সাড়ে ১৪ হাজার গবাদি পশুর খামার রয়েছে। এসব খামারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ৯৭ হাজার ৪১৭ গবাদিপশু। আর জেলায় কোরবানি পশুর চাহিদা রয়েছে ৯৯ হাজার ২৫২টি। নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলায় এবার ৯৫টি গরুর হাট বসছে। আমরা পরিষ্কার নির্দেশনা দিয়েছি- যে হাটের গরু সেই হাট ছাড়া অন্য কোনো জায়গায় থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সেই সঙ্গে গরুর হাটকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। প্রত্যেকটা হাটেই আনসার বাহিনী থাকবে।
ব্যস্ত মেহেরপুরের খামারিরা : আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু প্রস্তুতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেরপুরের প্রায় ২৬ হাজার খামারি। প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে সম্পূর্ণ দেশি পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করা হয়েছে। খামারিরা বলছেন, কোনো প্রকার ক্ষতিকর কেমিকেল ব্যবহার ছাড়াই পশু প্রস্তুত করেছেন তারা। জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর জেলায় বাণিজ্যিক ও পারিবারিক ২৬ হাজার ৪৭টি খামারে মোট ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৫৩টি কোরবানিযোগ্য পশু গরু, ছাগল, ভেড়া ও মহিষ লালন-পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩ হাজার ২৯৭টি গরু, ১ লাখ ১৫ হাজার ছাগল, ২ হাজার ৬৯৪টি ভেড়া ও ৭৬২টি মহিষ কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
খামারি রাসেল মিয়া বলেন, গুরুর খাদ্যর দাম বেশি। গরুপ্রতি প্রতিদিন আড়াই শ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হচ্ছে। খামারে এবার ৩৫টার ওপর গরু আছে। যদি বাইরে থেকে গরু না আসে তাহলে ভালোই লাভ হবে।