বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত একটি বন্যহাতির চিকিৎসা দিতে গিয়ে হাতিটির আক্রমণে গুরুতর আহত হন দুই চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাদের মধ্যে তিনজনের গুরুতর। এর মধ্যে দুই চিকিৎসককে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিজিবির হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছে।
আজ শনিবার সকাল ১০টায় তাদের কক্সবাজার সামরিক হাসপাতাল থেকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে হেলিকপ্টারে করে নিয়ে আসা হয়।
বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল শুক্রবার বিকালে কক্সবাজার জেলার রামু উপজেলার মিয়ানমার সীমান্তবর্তী রাজারকুল থোয়াইংগ্যকাটা এলাকার বালুচড়া দক্ষিণের পাহাড়ে মাইন বিস্ফোরণে আহত হাতির চিকিৎসা দিতে গেলে হাতিটির আক্রমণে তিনজন গুরুতরভাবে আহত হন।
গুরুতর আহতরা হলেন ডুলাহাজরা সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকারনাইন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং সেভ দ্য ন্যাচার অব বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা শাখার সদস্য সচিব মো. আতিকুর রহমান। বাকি আহতরা স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
বন বিভাগের তথ্যমতে, হাতিটির সামনের ডান পা বিস্ফোরণে প্রায় অবশ হয়ে গেছে। পায়ের তলা ও নখ উড়ে গেছে। হাতিটি খুঁড়িয়ে হাঁটছে, যন্ত্রণায় খাবার সংগ্রহ করতেও কষ্ট হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানান, হাতিটি রক্ত ও পানিশূন্যতায় ভুগছে এবং দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাকে সুস্থ করতে হলে দীর্ঘমেয়াদি নিবিড় পরিচর্যা প্রয়োজন।
রামুর রেঞ্জ কর্মকর্তা আলী নেওয়াজ জানান, গত রবিবার মিয়ানমার সীমান্তের পাশে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি গুরুতর আহত হয় এবং পরে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। খবর পেয়ে শুক্রবার কয়েকজন চিকিৎসকসহ বন বিভাগের ১৫ সদস্য নিয়ে তিনি রামু উপজেলার দারিয়ারদীঘি সংরক্ষিত বনে যান। সেখানে পৌঁছানোর পর হাতিটি হঠাৎ তাদের আক্রমণ করে। এতে সবাই আহত হন। এমনকি হাতিটি একজনের বন্দুক কেড়ে নিয়ে বনের ভেতরে ছুড়ে ফেলে, যা পরে উদ্ধার করা হয়।
কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আহত হাতিটির চিকিৎসা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বন বিভাগের কর্মীরা আহত হলেও তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি রেঞ্জ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক সরকার বলেন, মিয়ানমারের ভেতরে স্থলমাইন বিস্ফোরণে হাতিটি আহত হয় এবং সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ