চুক্তি করেও সরকারি খাদ্যগুদামে চাল না দেওয়ায় যশোরের ৬২টি রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। গত ২০ মার্চ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সংগ্রহ শাখা থেকে পাঠানো ‘অভ্যন্তরীণ আমন সংগ্রহ, ২০২৪-২৫ মৌসুমে চুক্তি না করা এবং ব্যর্থ চালকলের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ’ শীর্ষক এক চিঠিতে এই নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে চিঠি পাওয়ার পর এক মাসেরও বেশি সময় পার হয়ে গেলেও এখনও সংশ্লিষ্ট রাইস মিলগুলো লাইসেন্স বাতিল করা হয়নি। যশোর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান রবিবার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মন্ত্রণালয়ের ওই চিঠিতে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ ২০২২’-এর ৭ ও ৮ নম্বর বিধান অনুযায়ী ৬২টি রাইস মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক বলেন, ওই বিধান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট রাইস মিলগুলোর মালিকদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ নোটিশের জবাব পাওয়া গেছে। কিছু নোটিশের জবাব উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে। তবে তিনি বলেন, যেসব জবাব পাওয়া গেছে তার বেশিরভাগই সন্তোষজনক নয়। ফলে ৬২ রাইসমিলের মধ্যে বেশিরভাগের লাইসেন্সই বাতিল হতে যাচ্ছে এটা প্রায় নিশ্চিত।
আপদকালের জন্য সরকার প্রতি বছর চাল সংগ্রহ ও মজুদ করে। দুর্যোগপূর্ণ এলাকা, ভিজিডি, ভিজিএফ এবং অন্যান্য প্রয়োজনে এই চাল ব্যবহার করা হয়।
যশোর জেলা খাদ্য অফিসের অডিটর উজ্জল কুমার জানান, সরকারি লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিলগুলোর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সরাসরি চাল সংগ্রহ করে এবং মিলগুলোর সক্ষমতা অনুযায়ী প্রতি মৌসুমে কত পরিমাণ চাল সরকারি গুদামে সরবরাহ করতে পারবে সে ব্যাপারে চুক্তি হয়।
তিনি জানান, ২০২৪-২৫ আমন মৌসুমে যশোর জেলার মিলগুলো থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে ১৪ হাজার ২৪৭ টন সেদ্ধ চাল ও ৮০১ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু মিল মালিকদের অসহযোগিতার কারণে অর্ধেকেরও কম মাত্র সাত হাজার ৩৭০ টন সংগ্রহ করা গেছে।
খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান বলেন, ২০২৪-২৫ মৌসুমে জেলার ১৬৩টি মিলকে চুক্তি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অন্যরা চুক্তি করলেও ৬২টি মিল চুক্তি করেনি। সে কারণে জেলায় চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে অর্ধেকেরও কম।
খাদ্য অফিস সূত্র জানায়, কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া মিলগুলোর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৫টি, মণিরামপুরে ১৩টি, কেশবপুরে ৮টি, অভয়নগরে চারটি, ঝিকরগাছায় দুটি, শার্শায় পাঁচটি, বাঘারপাড়ায় দুটি ও চৌগাছা উপজেলায় ১৩টি রয়েছে। ৯ এপ্রিল পাঠানো নোটিশের জবাব ২৩ এপ্রিলের মধ্যে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে ২৪টি জবাব পাওয়া গেছে। কিছু জবাব উপজেলা পর্যায়ে রয়েছে। সব জবাবগুলো পর্যালোচনা করে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান জানিয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল