স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ের জন্য জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি— এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তাঁরা বলেন, স্তন ক্যান্সারের লক্ষণ, ঝুঁকির কারণ ও চিকিৎসা নিয়ে দেশে আরও গবেষণা ও জনসচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি। গবেষণার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানে নতুন সেবার পথ উন্মোচিত হবে।
রবিবার সকালে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের (সিআইএমসি) অডিটোরিয়ামে ‘বিশ্ব স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ উপলক্ষে আয়োজিত বৈজ্ঞানিক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। প্রতিবছর অক্টোবর মাসে বিশ্বজুড়ে এই মাসটি ‘স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালিত হয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সিআইএমসির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিপু সুলতান। প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ডেভেলপমেন্ট ফর এডুকেশন সোসাইটি অ্যান্ড হেলথের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান ডা. একেএম ফজলুল হক, সেক্রেটারি ও শিশু বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. মুসলিম উদ্দিন সবুজ, চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. আকরাম পারভেজ চৌধুরী এবং অবস অ্যান্ড গাইনি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মুসলিনা আখতার।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিআইএমসির সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শারমিন আক্তার এবং প্যাথলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তাহমিনা হোসাইন।
চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে মৃত্যুহার অনেকাংশে কমানো সম্ভব। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্ত হলে সম্পূর্ণ আরোগ্য সম্ভব। কিন্তু বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে অনেক নারী এখনো চিকিৎসা নিতে অনাগ্রহী, ফলে দেরিতে চিকিৎসা শুরু হওয়ায় সুফল পান না।
তিনি আরও বলেন, এই মাস পালনের মূল উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষের মধ্যে স্তন ক্যান্সার বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা এবং সময়মতো চিকিৎসার প্রতি উৎসাহিত করা।
বক্তারা জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক গবেষণা অনুযায়ী, প্রতিবছর প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার মানুষ স্তন ক্যান্সারে মারা যান। ২০২৫ সালের হিসাব অনুযায়ী, এ বছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার ৯৫০ জন নারীর আক্রমণাত্মক স্তন ক্যান্সার শনাক্ত হবে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এখনো পর্যাপ্ত গবেষণা ও তথ্য নেই, যা জরুরি ভিত্তিতে বাড়াতে হবে।
তাঁরা বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ শনাক্তকরণ ও সচেতনতা বাড়ানোর মাধ্যমে মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। তাই জাতীয়ভাবে স্তন ক্যান্সার স্ক্রিনিং নীতিমালা প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি।
বিডি-প্রতিদিনি/মাইনুল