খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব ছাড়ার আগে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রেখেই বিদায় নেবে। এ বিষয়ে সরকারের একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। দায়িত্বের শেষ দিন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা হবে।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত খাদ্যবান্ধব এবং ওএমএস কর্মসূচি বিষয়ক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের দেশে বর্তমানে প্রায় ১৬ লাখ টন চাল মজুদ রয়েছে। গম মজুদ আছে প্রায় ১ লাখ টনের মতো। এছাড়া গমবাহী একটি জাহাজ বর্তমানে কুতুবদিয়া বহিঃনোঙ্গরে খালাসের অপেক্ষায় আছে। আমেরিকা এবং রাশিয়া থেকে আরও দুটি জাহাজ আসছে। ইতোমধ্যে আমেরিকা থেকে গম আমদানির জন্য অতিরিক্ত চুক্তিও হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, চালের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। এক পর্যায়ে দাম বেড়ে গেলেও তা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে বর্তমানে ৫৫ লাখ পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই পরিবারগুলোকে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছে। আগে এ কর্মসূচি সেপ্টেম্বর থেকে ৫ মাস চলত, এখন শুরু হয়েছে আগস্ট থেকে এবং চলছে ৬ মাস। এর ফলে বাজারে চালের অতিরিক্ত চাপ কমেছে, আর সরবরাহ বাড়ায় দামের ওপর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
চাল উৎপাদকদের আক্ষেপ প্রসঙ্গে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, “চালের দাম আরো কমলে সবার জন্য ভালো হতো, তবে উৎপাদকরা ন্যায্য দাম না পেলে তা টেকসই হবে না। বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে।”
অবৈধ মজুদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দুইভাবে অবৈধ মজুদ হতে পারে। যদি লাইসেন্স ছাড়া মজুদ করা হয়, অথবা লাইসেন্স থাকলেও অনুমোদিত সীমার বাইরে মজুদ করা হয়। এ ধরনের বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা কেউ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, “মানুষের আয় থেকে প্রায় ৭০ শতাংশই খাদ্যে ব্যয় হচ্ছে। এবারের অনিয়মিত বৃষ্টির কারণে শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফলে বাজারে ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে বাজার মনিটরিং জোরদার করা, যাতে সিন্ডিকেট বা চাঁদাবাজির মাধ্যমে দাম বাড়ানো না যায়।”
সভায় চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দিন এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আবুল হাসনাত হুমায়ুন কবীর।
বিডি প্রতিদিন/আশিক