দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয় উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় বাধা বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের লায়েটনার আন্তর্জাতিক আন্তঃবিভাগীয় ইতিহাসের অধ্যাপক ড. ডেভিড সি. এঙ্গারম্যান।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের প্রসঙ্গে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে চাই না, কারণ তা উপযুক্ত হবে না বলে মনে করি। তবে আমি ভাবি, ক্রমবর্ধমান সহায়তার বেসরকারিকরণ (প্রাইভেট অব এইড) দুর্নীতির ওপর কী প্রভাব ফেলছে। বড় সরকারি চুক্তি ও ক্রয় প্রক্রিয়া সরকারের অভ্যন্তরে দুর্নীতির সহজ সুযোগ তৈরি করে। কিন্তু একইভাবে বেসরকারি খাতও সবসময় অর্থের ব্যবস্থাপনা নিখুঁতভাবে করে— তা নিশ্চিত নয়। আমার ধারণা এই নতুন, অধিকতর বেসরকারি-কেন্দ্রিক উন্নয়ন ব্যবস্থায় (প্রাইভেট সেন্টার ডেভলপমেন্ট ওয়ার্ল্ড) দুর্নীতি সম্পূর্ণভাবে বিলীন হবে না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটরিয়ামে আয়োজিত ‘আন্তর্জাতিক উন্নয়ন : অতীত, বর্তমান ও সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগ।
এঙ্গারম্যান বলেন, কোনো দেশের উন্নয়নে অন্য দেশ বা সংস্থা থেকে পাওয়া উন্নয়ন সহযোগিতার যুগ শেষ। এখন সহযোগিতার বিপরীতে অর্থ পেতে ঋণ করতে হবে। এক্ষেত্রে দেশগুলোর বেসরকারি আর্থিক খাত ও এনজিও উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে কাজ করতে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী আশীর্বাদ? এ বিষয়ে তিনি বলেন, যেকোনো প্রযুক্তি আন্তঃবৈষম্য বাড়ায়। একে কাজে লাগিয়ে একটা পক্ষ নিজেদের দ্রুত উন্নয়ন ঘটায়, আরেকপক্ষ ক্রমেই পিছিয়ে পড়ে।
এঙ্গারম্যান বলেন, স্বাধীনতার পর পাকিস্তানের ফেলে যাওয়া শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয়করণ করা হলেও, অদক্ষ জনবল আর দুর্নীতির কারণেই ভালো ফল পাওয়া যায়নি।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ।
সেমিনারে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী ইকবাল ও ইকোনমিক রিসার্চ গ্রুপের নির্বাহী পরিচালক ড. সাজ্জাদ জহির প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/কেএ