রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) দ্রুত অনুমোদন ও পূর্ণ বাস্তবায়নের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মহাসড়কে ক্লাস করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জ-পাবনা মহাসড়কের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে রাস্তার উপর বসেই বিভিন্ন বিষয়ের ক্লাসে অংশ নেন তারা। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। মহাসড়কে ক্লাস অনুষ্ঠিত হওয়ায় দুই পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়, ফলে যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগে পড়েন।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে ভাড়া করা ভবনে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে আবাসন সংকট, ক্লাসরুম ও লাইব্রেরির স্বল্পতা, খেলাধুলার সুযোগের অভাব এবং ছাত্রীদের নিরাপত্তার ঝুঁকির মুখে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণের লক্ষ্যে গত ৯ বছরে ৮ বার ডিপিপি জমা দেওয়া হলেও, একবারও তা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়নি।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গত বছর সরকার সংশোধিত ডিপিপি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই অনুযায়ী ৫১৯ কোটি টাকার একটি সংশোধিত ডিপিপি দাখিল করা হয় এবং প্রথম বৈঠকে নীতিগত অনুমোদনও দেওয়া হয়। এরপর পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নির্ধারিত স্থানে সরেজমিন পরিদর্শন শেষে একটি প্রতিবেদন জমা দেন। তবে ওই প্রতিবেদনে কী লেখা হয়েছে, তা এখনো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা শিক্ষার্থীদের জানানো হয়নি। এদিকে একাধিক একনেক সভা অনুষ্ঠিত হলেও প্রকল্পটি এখনো সভার আলোচ্যসূচিতে স্থান পায়নি।
শিক্ষার্থীদের দাবি, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পকে এভাবে উপেক্ষা করা শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতি অবহেলা নয়, এটি পুরো বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় বিদ্যমান বৈষম্যের একটি পরিষ্কার চিত্র। তাদের অভিযোগ, যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন পায়, সেখানে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প এখনও অনিশ্চয়তায় রয়েছে।
দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন। ২৬ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস বর্জন ও কালো ব্যাজ ধারণের মধ্য দিয়ে তারা কর্মসূচি শুরু করেন। পরবর্তী দুই দিন ধরে শিক্ষার্থীরা সড়কে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ঘোষণা- ডিপিপি অনুমোদন ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ