স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থান পুনর্জাগরণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) 'জুলাই উইমেন্স ডে' পালিত হয়েছে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের দৃঢ়তা নতুন বাংলাদেশ গঠনে ভিত্তি তৈরি করবে। এ অভ্যুত্থানের অসাধারণ দিক ছিল নারী-পুরুষের সমান অংশগ্রহণ। বৃদ্ধা মা থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা দলমত নির্বিশেষে আন্দোলনের প্রতিটি মুহূর্তে সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। তারা যে অত্যন্ত সাহসী, যোগ্য এবং দেশের জন্য যে যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত তা আমরা এই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেখিছি। নারীদের এই সংগ্রামী ইতিহাস জাতি ভুলতে পারবে না।
কর্মসূচিটি উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। পরে সিনেট ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দিনটি স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মুখসারির এক নেতৃ সানজিদা ঢালী। তিনি বলেন, জুলাই আন্দোলনে আমাদের ভাইদের জন্য আন্দোলনে গিয়েছিলাম, কারণ তারা বঞ্চিত হচ্ছিল। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাজপথে আন্দোলন করেছি। নারী হিসেবে এটা খুব সহজ ছিল না। রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও সামাজিক নানা প্রতিবন্ধকতা ছিল, হুমকি ছিল, চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেক মেয়ে আসতে সাহস করতো না। তাদের সংগঠিত করেছি। সাহস যুগিয়েছি। তারপর আন্দোলনে এসেছি। এসব কিছুর মুখোমুখি হয়েও সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। আমরা একটি সাম্য ও ন্যায়ের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি।
সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের অবদান অনেক। কোটা থেকে এক দফার আন্দোলন পর্যন্ত তারা সম্মুখসারিতে থেকে আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছে। এদিন স্বৈরাচার যখন আমাদের রাজাকার বলেছিল, সেদিন হলের তালা ভেঙে নারীরা রাজপথে ফেটে পড়েছিল। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরা সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। নারীদের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছাড়া এ আন্দোলন হয়তো সফল হতো না।
এর আগে, গত বছর ১৪ জুলাই তীব্র রোদে প্রায় ৯ কি.মি অতিক্রম করে ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভ নিয়ে ডিসি কার্যালয়ে রোডমার্চ করে। সেদিন বিকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলা নিয়ে বিতর্কে জেরে রাতে হলের তালা ভেঙে নারী শিক্ষার্থীরা রাজপথে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরদিন থেকে আন্দোলন আরো দ্রুতগতিতে বেগবান হতে থাকে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত