কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে 'বাংলা নববর্ষ ১৪৩২' উদযাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে দিনব্যাপী নানা আনন্দঘন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে অংশগ্রহণ করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার দিনব্যাপী এই আয়োজন করা হয়েছে।
দিনের শুরুতেই সকাল সাড়ে ৯টায় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলী’র নেতৃত্বে বর্ষবরণ শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে বৈশাখী চত্বরে অনুষ্ঠিত বর্ষবরণ মেলাতে গিয়ে শেষ হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এরপর ১০ টায় ছেলেদের মোরগ লড়াই ও মেয়েদের মিউজিক্যাল চেয়ার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করে লোকগান, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি এবং নাটিকা। এছাড়াও, নববর্ষ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের পক্ষ থেকে বসানো হয় পিঠাপুলির স্টল। যেখানে বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানা ধরনের পিঠা যেমন পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা ও মালপোয়া পরিবেশন করা হচ্ছে।
ভাইস চ্যান্সেলর ড. মো. হায়দার আলী বলেন, 'বাংলা নববর্ষে এদেশের সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের মিলনমেলা বসে। এই উৎসব ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য উদাহরণ। নানা রকমের স্টল এবং সাংস্কৃতিক আয়োজন এই উৎসবকে আরও বর্ণিল করে তুলেছে। '
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, ' আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য যাতে কখনো হারিয়ে না যায়, সেদিকে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। আমরা আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে মহান স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই স্বাধীনতাকে শক্তি ও প্রেরণা হিসেবে ধারণ করে দেশ ও জাতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। এই আয়োজন নবপ্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগ্রত করবে।'
ট্রেজারার প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, 'আমাদের বাঙালিদের জন্য এবারের পহেলা বৈশাখ দেশ গড়ার এক নতুন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে। বিগত বছরের ফ্যাসিবাদের থাবা থেকে মুক্ত হয়ে, আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার যে অঙ্গীকার — সেটি এই নতুন বছরের প্রভাতে হতে পারে এক ভিন্ন শপথের সূচনা। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সমুন্নত রেখে আমরা যেন সেই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি। '
উল্লেখ্য, দীর্ঘ পাঁচ বছর পর কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হওয়ায় পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম