‘নববর্ষের ঐক্যতান, ফ্যাসিবাদের অবসান ও মানবতার জয়গান’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উদযাপন করা হয়েছে। এ আয়োজনের মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ এবং ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানানো হয়।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান তার বাসভবনে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে দিনের সূচনা করেন। এসময় পরিবেশিত হয় 'এসো হে বৈশাখ'সহ বাংলা নববর্ষের নানা গান। অতিথিদের আপ্যায়নে ছিল ঐতিহ্যবাহী বাঙালি খাবার—জিলাপি, সন্দেশ, কদমা, তরমুজ, আমের শরবত, বাতাসা, মুড়ি, খৈ প্রভৃতি।
পরে সকাল পৌনে ১০টায় বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ ভবনের সামনে থেকে শুরু হয় বর্ষবরণের আনন্দ শোভাযাত্রা। এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শেষ হয় অমর একুশে পাদদেশে।
শোভাযাত্রার উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, 'বাংলা নববর্ষ বাঙালি জাতিসত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ উৎসব সার্বজনীন, যা দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে একত্রিত করে। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমরা একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে নববর্ষ উদযাপন করছি। ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আমাদের দেশ গড়ার স্বপ্নকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে। ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করছি।'
শোভাযাত্রায় অংশ নেন উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, হল প্রভোস্ট, মহিলা ক্লাবের সদস্যসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অংশগ্রহণ করে জাবি স্কুল ও কলেজের শিক্ষকবৃন্দও।
দিনব্যাপী উৎসবের অংশ হিসেবে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র ও ছাত্রকল্যাণ ও পরামর্শকেন্দ্রের আয়োজনে সন্ধ্যায় সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া চারুকলা বিভাগ, নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ, বাংলা বিভাগ, সাংবাদিকতা বিভাগ, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ আয়োজন করে বইমেলা, শিশু মেলা, পুতুল নাচ, নাগরদোলা, গীতনৃত্যনাট্য, লোকনাট্য, অন্তর বাদন, যাত্রাপালা ও সঙ-সারিকের মতো নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
বিডি প্রতিদিন/মুসা