বগুড়ার বাজারে সবজির দাম এখন রীতিমতো আকাশছোঁয়া। যা নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসাব কিছুতেই মিলাতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, বর্ষার কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমে গেছে। এতে করে তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে।
জানা গেছে, টানা তিনদিনের বৃষ্টিতে জেলায় অনেক সবজির জমি নষ্ট হয়েছে। স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে সবজির সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে সবজির দাম চড়া। কৃষক কিছুটা সহনশীল দামে তাদের উৎপাদিত সবজি বিক্রি করলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা সেই সবজি কয়েক হাত ঘুরে ভোক্তার কাছে তা দ্বিগুণ দামে তুলে দিচ্ছেন। এ কারণেও সবজির দাম বাড়ছে। বাজারে প্রায় সব সবজিতেই কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়েছে। এছাড়াও পিয়াজ বেশ কিছু দিন ধরেই ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার বগুড়ার রাজাবাজার, ফতেহ আলী বাজার, কলোনী, খান্দার ও বকশি বাজারসহ বেশকিছু বাজার ঘুরে দেখা যায়, সব ধরনের সবজির দাম কেজি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা বাড়তি। হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। বাজারে প্রতি কেজি বেগুনের দাম ১০০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন সিম প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, তরি ১০০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ২৮০ টাকা, পিয়াজ ৭০ টাকা, পটল ৮০ টাকা, ঢেড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি লাউ ৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, চিচিংগা ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা ও পেঁপে ২০ টাকা এবং বই কচু ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতে দেখা যায়। বাজারে দেশি আদা ১৪০ টাকা ও রসুন ১২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, বাজারে প্রতি কেজি বিআর-২৮ চাল ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বিআর-৪৯ চাল ৬২ থেকে ৬৩, স্বর্ণা ৫৮ থেকে ৬০, কাটারিভোগ ৭২ থেকে ৭৫, নাজিরশাইল ৮৫ থেকে ৮৬ এবং মিনিকেট চাল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকায় বেচাকেনা হতে দেখা যায়।
এদিন, ডিমের হালি ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, ব্রয়লার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা এবং সোনালী মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭২০ থকে ৭৫০ এবং খাসির মাংসের কেজি ১০৫০ থেকে ১১শ’ টাকা।
বাজারে ইলিশের কেজি সর্বনিম্ন এক হাজার টাকা থেকে ২২শ’ টাকা। আড়াই থেকে তিন কেজি ওজনের সিলভার কার্প মাছ প্রতি কেজি ২৩০ টাকা, তিন কেজি ওজনের কাতল মাছ ৩৫০ টাকা এবং দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের রুই মাছ ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়। এছাড়াও চিংড়ির কেজি ৭০০ টাকা, টেংরা মাছ ৪০০ থেকে ৪৫০, পাবদা আকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায় বেচাকেনা হচ্ছে।
বাজার করতে আসা শহরের চেলোপাড়া এলাকার আব্দুস সালাম জানান, আকাশে মেঘ দেখলেই সবজির দাম বাড়ে। কাঁচাবাজারে তরকারি কিনতে গেলে বাজারের হিসাব আর ঠিক থাকে না।
তিনি বলেন, গ্রামের বাজারেও দাম প্রায় শহরের মতোই চড়া। সবজির দাম এমন চড়া হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
কলোনী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল মজিদ জানান, বর্ষার কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশি। তারা পাইকারি আড়ৎ থেকে বেশি দামে কিনে সামান্য লাভে বিক্রি করেন। সব সবজি বিক্রি না হলে তা পচে নষ্ট হয়। তাতে তাদের লোকসান হয়।
তিনি বলেন, এ সময় প্রতি বছর সবজির দাম চড়া থাকে। আর কিছুদিন পর বাজারে নতুন সবজি এলে তখন এমন দাম থাকবে না।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত