স্বল্প সময়ে কম খরচে বেশি লাভ লতিরাজ কচু চাষে। ভালো ফলন, সুস্বাদু স্বাদ ও বাজার চাহিদার কারণে দিন দিন বাড়ছে এই লতিরাজ কচু চাষ। ‘লতিরাজ’ একটি উন্নত জাত, যা স্বাদ ও পুষ্টিগুণে অনন্য হওয়ায় স্থানীয়ভাবে গরিবের পুষ্টিকর সবজি হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে। চাষে ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় দিনাজপুরের খানসামায় কৃষকরা এখন এই জাতের কচু চাষ করে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছেন। জেলার মধ্যে বেশি চাষও হয় এই খানসামায়।
স্থানীয় কয়েকজন কৃষক জানান, লতিরাজ কচুর লতি, পাতা ও কন্দ তিনটিই কাজে লাগে। লতি ও কন্দ সবজি হিসেবে এবং পাতা শাক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কেউ কেউ পাতা দিয়ে জৈব সারও তৈরি করছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের সহায়তায় নিরাপদ এই সবজি চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন খানসামার গোয়ালডিহি ইউপির দুবলিয়া গ্রামের কৃষক মুকুল চন্দ্র রায়।
মঙ্গলবার দেখা যায়, খানসামার দুবলিয়া গ্রামের কচুক্ষেতে কৃষক মুকুল চন্দ্র রায় লতিরাজ কচুর লতি সংগ্রহ করছেন। সবুজ মাঠজুড়ে ছড়িয়ে থাকা কচুর গাছে ভরপুর লতি।
চাষি মুকুল চন্দ্র রায় জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে গত বছরের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে কুমিল্লা থেকে সংগ্রহ করা বারি-১ জাতের ৭ হাজার লতিরাজ কচুর চারা ৫০ শতক জমিতে রোপণ করেন। রোপণের ৬০-৭৫ দিনের মধ্যে ৩৫-৪০ টাকা কেজি দরে লতি বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে ৫-৬ মণ কচুর লতি উত্তোলন করে বাজারজাত করছেন। মৌসুমজুড়ে লতি বিক্রি করে প্রায় দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হবে বলে আশা করছেন। এছাড়া মৌসুম শেষে কচুর কন্দ বিক্রি করেও আরও প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকা আয় হবে।
মুকুল চন্দ্র রায় আরও জানান, কচু চাষে ৫০ শতকে জমি প্রস্তুত থেকে কর্তন পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। তুলনামূলক কম খরচ, কম শ্রম আর ভালো মুনাফা সবমিলে এটি তার জন্য লাভজনক ফসলে পরিণত হয়েছে। আগামীতে লতিরাজ চাষ বৃদ্ধি করবেন বলে জানান তিনি।
খানসামা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষকদের লতিরাজ কচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভালো ফলন ও বাজারে চাহিদার কারণে চাষিরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ভালো দামও পাচ্ছেন। সঠিকভাবে নির্দেশনা অনুসরণে কচু চাষে দেশজুড়ে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই