আমন মৌসুমের চূড়ান্ত সময়ে ঝিনাইদহে দেখা দিয়েছে তীব্র রাসায়নিক সারের সংকট। এতে আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের অভিযোগ, সংকট দেখিয়ে ডিলাররা সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন।
জেলা কৃষি অফিস জানায়, এ মৌসুমে জেলায় আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে। বাস্তবে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। অতিবৃষ্টির কারণে ২৮৪ হেক্টর জমি নিমজ্জিত হয়েছে। এ মাসে চাহিদা রয়েছে ইউরিয়া ৫ হাজার ১২৬ মেট্রিক টন, টিএসপি ৯৮২ মেট্রিক টন, ডিওপি ১ হাজার ৭৪৮ মেট্রিক টন ও এমওপি ১ হাজার ৮১৮ মেট্রিক টন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সদর উপজেলার কাষ্টসাগরা, বাড়ি বাথান, গয়েশপুর, ডেফলবাড়ী ও বেড়বাড়ীসহ বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা চারা রোপণ ও জমিতে সার প্রয়োগে ব্যস্ত। তবে সংকটের কারণে অনেকে ঠিকমতো সার পাচ্ছেন না। গয়েশপুর গ্রামের আজিবর মোল্লা বলেন, “এক বস্তা সারের দরকার, দিচ্ছে মাত্র ১০ কেজি।” বানিয়াকান্দর গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম জানান, সার না পাওয়ায় জমিতে ঠিকমতো ধান লাগাতে পারেননি।
কৃষকরা অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেট গড়ে ডিলাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন। তবে সদর উপজেলার পাগলাকানাই ইউনিয়নের ডিলার মেসার্স সুমন ট্রেডার্সের ম্যানেজার নজিমুল ইসলাম বলেন, “সারের কোনো সংকট নেই, কৃষকেরা বাড়িয়ে বলছেন।” জেলা সার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, “চাহিদার তুলনায় সার কম আসছে। আমাদের ওপর থেকে বলা হচ্ছে কৃষকদের বুঝিয়ে দিতে।”
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোঃ কামরুজ্জামান দাবি করেন, “সারের কোনো সংকট নেই। অসাধু ব্যবসায়ীরা যেন কৃত্রিম সংকট না করতে পারে, সে জন্য কঠোর মনিটরিং চলছে। কেউ বেশি দামে সার নিলে রিসিট দিলে সাথে সাথে তার লাইসেন্স স্থগিত করা হবে।”
জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল বলেন, “সার নিয়ে আমরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছি। ছয়টি উপজেলায় কোথাও কোনো সংকট নেই।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক