হারিয়ে যেতে বসা ‘সোনালী আঁশ’ খ্যাত পাটের দিনাজপুরে আবারও সুদিন ফিরতে শুরু করেছে। কয়েক বছর ধরে ন্যায্য দাম না পেয়ে হতাশ ছিলেন চাষিরা। তবে চলতি মৌসুমে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এবং ভালো দাম মেলায় কৃষকরা আশার আলো দেখছেন।
গত কয়েক বছরে যেখানে প্রতি মণ পাটের দাম ছিল ১ হাজার ৮০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা, এবার বাজারে প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায়। পাশাপাশি পাটকাঠিরও ভালো দাম মিলছে—প্রতি মণ ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকরা অতিরিক্ত লাভবান হচ্ছেন।
ফুলবাড়ী উপজেলার মোক্তারপুর গ্রামের পাটচাষি মাহাবুর রহমান, আজিজুল হক ও নজরুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বছর লোকসানের আশঙ্কায় অনেকে শুধু জমির উর্বরতা ধরে রাখতে পাট চাষ করতেন। কিন্তু এবার ভালো দাম পেয়ে আমরা খুশি। তবে উপজেলায় কোনো আড়ৎ না থাকায় পাশের বিরামপুর উপজেলায় পাট বিক্রি করতে যেতে হয়, এতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
চাষিরা আরও অভিযোগ করেন, ফুলবাড়ীতে পর্যাপ্ত কারখানা না থাকায় পাট শিল্প বিকাশ ঘটছে না। এ শিল্পের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন বলে তারা দাবি জানান।
ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) শাহানুর রহমান বলেন, পাট সম্ভাবনাময় একটি ফসল। অতীতে ব্যাপক হারে পাট চাষ হলেও তা কমে গিয়েছিল। আবারও উৎপাদন বাড়াতে সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০ জন কৃষকের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
ফুলবাড়ী কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এতে ৭১০ বেল পাট উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলার ১৩ উপজেলায় মোট ৪ হাজার ৩৭২ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল