ভালোবাসা প্রকাশে চুমু এক স্বাভাবিক অঙ্গভঙ্গি। কিন্তু এর পরেই লিপস্টিকের দাগ লেগে যাওয়া বা তা নষ্ট হয়ে যাওয়া বেশ বিব্রতকর। এর সমাধানে কিস-প্রুফ লিপস্টিক যেন এক আশীর্বাদ। এ ধরনের কসমেটিক্স এখন খুব প্রচলিত হলেও এর যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৫০-এর দশকে। যখন হলিউডের অভিনেত্রী মেরিলিন মনরো এবং এলিজাবেথ টেইলর নিখুঁত লিপস্টিকে ঠোঁট সাজিয়ে সৌন্দর্য জগতে এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করেন।
তখন লিপস্টিক প্রায়ই কফি কাপ, ন্যাপকিন বা প্রেমিকের গালে লেগে যেত, যা বিড়ম্বনা সৃষ্টি করত। এই সমস্যার সমাধানে রসায়নবিদ হ্যাজেল বিশপ প্রথম ১৯৫০ সালে তৈরি করেন ‘লাস্টিং লিপস্টিক’। তার এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের স্লোগান ছিল ‘Stays on you, not on him’ (তোমার ওপর থাকে, তার ওপর নয়)। এই স্লোগানটি দ্রুত ক্রেতাদের মধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করে। প্রচলিত ওয়াক্স-ভিত্তিক লিপস্টিকের বদলে হ্যাজেলের ফর্মুলায় ব্যবহৃত হতো তেল ও স্থায়ী রং (Stunning Dye)। এরপর দ্রুতই বাজারে প্রতিযোগিতা শুরু হয়। রেভলন এবং ম্যাক্স ফ্যাক্টরের মতো কোম্পানিগুলোও একই পণ্য নিয়ে আসে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিস-প্রুফ লিপস্টিকের ফর্মুলায় বদল এসেছে। শুষ্ক ঠোঁট বা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা দূর করে নতুন ফর্মুলাগুলো তৈরি করা হয়। এখনকার ম্যাট লিকুইড লিপস্টিক- কিস-প্রুফ লিপস্টিক হিসেবে পরিচিত, যা ২০১৬ সাল থেকে মাল্টি-বিলিয়ন ডলারের শিল্পে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায়ও এর চাহিদা বাড়ছে, বিশেষ করে ব্রাইডাল মেকআপে। এটি দীর্ঘ সময় মেকআপকে অটুট রাখে। এখন মেবিলিন সুপার স্টে এবং ফেন্টি স্টানার মতো পণ্য ১২-১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ঠোঁটে টিকে থাকার ক্ষমতা রাখে। শুধু নারীদের জন্য নয়, পুরুষদের গ্রুমিং পণ্য যেমন লিপ টিন্ট এবং বামও একই ফর্মুলায় তৈরি হচ্ছে। অর্থাৎ চুমুর ছোঁয়া ধরে রাখার চেষ্টা দিন দিন বাড়ছে।