শরীয়তপুরের জাজিরায় ভাঙছে পদ্মা নদী, কাঁদছে মানুষ। ভাঙন আতঙ্কে দিশাহারা কয়েক হাজার মানুষ। অন্যদিকে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার কাচালং নদীর পানি। তাই ডুবে গেছে সাজেক যাওয়ার পাহাড়ি সড়ক। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়সহ পর্যটকরা।
শরীয়তপুর : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের জিরো পয়েন্ট এলাকায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে আলম খাঁর কান্দি জামে মসজিদের দ্বিতল ভবন বিলীন হয়ে গেছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে; যা স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক ভাঙনকবলিতদের স্থায়ী বসবাসের জন্য খাসজমি দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শী নুরউদ্দিন মাঝি বলেন, ‘সকালে শুনি মসজিদে ফাটল ধরেছে। আমরা ছুটে আসি, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে বিকট শব্দে পুরো মসজিদটি নদীতে ধসে পড়ে। এমন দৃশ্য দেখে আমরা স্তব্ধ হয়ে যাই।’
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডের রক্ষাবাঁধ এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। চলতি বছর ছয় দফা ভাঙনে প্রায় ৬৫০ মিটার রক্ষাবাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এর ফলে আলম খাঁর কান্দি, ওছিম উদ্দিন মাদবরকান্দি, উকিল উদ্দিন মুন্সিকান্দি ও মাঝির ঘাট এলাকার ৩০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ৫০টি বসতবাড়ি ইতোমধ্যে পদ্মায় হারিয়ে গেছে। এ ছাড়া শতাধিক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক মিস তাহসিনা বেগম বলেন, ‘এলাকায় ভাঙন পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে এবং ক্ষয়ক্ষতির তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
রাঙামাটি : টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢল, উজান থেকে নামছে পানি; এতে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার কাচালং নদীর পানি। ডুবে গেছে সাজেক যাওয়ার পাহাড়ি সড়ক। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়সহ পর্যটকরা। সড়কের পাশাপাশি পানিতে তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, দোকানপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ফসলি জমি।
পাউবো সূত্রে জানা যায়, টানা বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলের কারণে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে রুলকার্ভ অনুযায়ী পানি রয়েছে ১০৮ ফুট এমএসএল; যা একেবারে বিপৎসীমায়। বর্তমানে হ্রদের পানি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তাই আপাতত দুই দফায় ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সাজেক পর্যটন রিসোর্ট মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন, ‘খুব বেশি পর্যটক সাজেকে আসেনি। তবে কিছুসংখ্যক পর্যটক নদী পার হয়ে সাজেকে এসেছে। যারা সাজেকে ছিল তাদের সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে।’