মার্কিন টেক জায়ান্ট মেটার প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ ঘোষণা দিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রে বিশালাকৃতির কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ডেটা সেন্টার নির্মাণে শত শত বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে।
তিনি বলেন, মেটা বর্তমানে সুপারইনটেলিজেন্স নির্মাণে কাজ করছে। এটি এমন এক ধরনের প্রযুক্তি যা মানব মস্তিষ্ককেও ছাড়িয়ে যেতে সক্ষম হবে। এই লক্ষ্য অর্জনে প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত নির্ধারক হচ্ছে শক্তিশালী এআই ডেটা সেন্টারের পরিকাঠামো গড়ে তোলা।
জুকারবার্গ তাঁর নিজস্ব সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থ্রেডস-এ দেওয়া এক পোস্টে বলেন, এই ডেটা সেন্টারগুলো হবে মাল্টি-গিগাওয়াট ক্লাস্টার—যার প্রতিটিই নিজস্বভাবে অনেক বড় শক্তিশালী কম্পিউটিং হাব হিসেবে কাজ করবে।
প্রথম ডেটা সেন্টার প্রমিথিউস নির্মাণ হবে ওহাইওর নিউ আলবানিতে। যা ২০২৬ সালের মধ্যে চালু হওয়ার কথা রয়েছে। অপরদিকে হাইপারিয়ন নামের আরেকটি বিশাল প্রকল্প লুইজিয়ানায় নির্মিত হচ্ছে। এটি ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জুকারবার্গ বলেন, আমরা আরও বেশ কয়েকটি টাইটান ক্লাস্টার তৈরি করছি। এর প্রতিটিই ম্যানহাটনের একটি বিশাল অংশের সমান জায়গা জুড়ে বিস্তৃত হবে। উল্লেখযোগ্য যে, নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের আয়তন ৫৯.১ বর্গকিলোমিটার।
মেটা জানিয়েছে, শুধু হাইপারিয়ন ক্লাস্টারই কয়েক বছরের মধ্যে ৫ গিগাওয়াট পর্যন্ত স্কেল করতে পারবে, যা বর্তমান সময়ের যেকোনো ডেটা সেন্টারের চেয়ে অনেক বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন হবে।
ক্যামব্রিয়ান এআই রিসার্চের প্রধান বিশ্লেষক কার্ল ফ্রয়েন্ড বলেন, স্পষ্টতই, জুকারবার্গ এআই দুনিয়ার শীর্ষে উঠতে অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছেন। মেটার নতুন প্রতিভাবান কর্মীরা বিশ্বের সেরা এআই হার্ডওয়্যার ব্যবহারের সুযোগ পাবে।
২০২৪ সালে মেটা ১৬০ বিলিয়ন ডলারের বেশি রাজস্ব আয় করেছে। যার বেশিরভাগই এসেছে অনলাইন বিজ্ঞাপন থেকে। ঘোষণার পর মেটার শেয়ার মূল্য প্রায় ১ শতাংশ বেড়ে গেছে এবং বছরের শুরু থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, এআই চালিত ডেটা সেন্টারগুলো ব্যাপকভাবে পানি ও বিদ্যুৎ খরচ করে। একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী এই ধরনের ডেটা সেন্টার ১.৭ ট্রিলিয়ন গ্যালন পানি খরচ করতে পারে। শুধু একটি এআই কুয়েরি—যেমন একটি চ্যাটজিপিটি রিকোয়েস্ট ছোট পানির বোতলের সমপরিমাণ পানি ব্যবহার করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রা যেমন একদিকে মানুষের ভবিষ্যত নির্ধারণ করবে, তেমনি অন্যদিকে পরিবেশগত দিক থেকেও গভীর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল