ম্যাচের মাত্র এক ঘণ্টা বাকি। ঘাস কাটা শেষ হয়নি তখনো। আশ্বিনের প্রচণ্ড তাপ মাথায় নিয়ে একমনে ঘাস কেটে চলেছেন একজন। ডি বক্স, পেনাল্টি বক্স আর সেন্টার সার্কেলের দাগ বসানো তখনো বাকি। লম্বা দড়িতে মাপজোক চলল। গোলবারের নেট লাগাতেও অনেকটা সময় চলে গেল। এসব করতে করতে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেল। বসুন্ধরা কিংস এবং মোহামেডানের চ্যালেঞ্জ কাপের লড়াই শুরু হতে পারল না নির্ধারিত সময়ে। ১১ মিনিট পর ম্যাচ মাঠে গড়ায়। ম্যাচ কমিশনার সুজিত কুমার সময়ের ব্যাপারটা নোটবুকে টুকে নিলেন। তখনো মাঠের সাইডলাইনে ঘাস কাটা চলছে। এক পাশে পুরস্কারের মঞ্চ তৈরি করছেন কাঠমিস্ত্রি। হাতুড়ির ঠুক ঠাক আওয়াজে পেরেক গেঁথে দিচ্ছেন। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামের মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানা ফাঁদ। কোথাও কাদা জমে আছে। কোথাও উঁচু-নিচু ঘাস। সেসব ফাঁদে পা দিয়ে ফুটবলাররা মাঝে মধ্যেই হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। সাইড লাইনের বাইরে লম্বা লম্বা ঘাস। সেসব ঘাসের আড়ালে কত কিছুই না লুকিয়ে থাকতে পারে! এমন বেহালদশা এক মাঠেই যাত্রা করল নতুন ফুটবল মৌসুম। মাঠ প্রস্তুত করার দায়িত্ব ছিল স্বাগতিক দল মোহামেডানের। সময়মতো সেই কাজটা তারা ঠিকমতো করতে পারল না। কেন পারল না তা নিয়েই যত রহস্য। লিগ চ্যাম্পিয়ন বলে চ্যালেঞ্জ কাপে স্বাগতিক দল হবে মোহামেডান এটাই স্বাভাবিক। গতবার যেমন নিজ ভেন্যু কিংস অ্যারিনায় চ্যালেঞ্জ কাপ আয়োজন করেছিল বসুন্ধরা কিংস।
মোহামেডানের হোম ভেন্যু কুমিল্লা হবে এটা অনেক আগে থেকেই শোনা যাচ্ছিল। অথচ ভেন্যুর অনুমতি নিতেই মোহামেডানের ছিল গা ছাড়া ভাব। তারা নাকি ম্যাচ ঢাকা জাতীয় স্টেডিয়ামে হোক তা চেয়েছিল। এজন্য তো আবেদন করতে হয়, তারা কি তা করেছিল? ম্যাচ আয়োজনের দুই দিন আগেই নাকি কুমিল্লার অনুমতি পেয়েছিল। তাহলে আগে কি ঘুমাচ্ছিল? ম্যাচ হবে মাঠকে উপযোগী করার দায়িত্ব তো স্বাগতিকদেরই। কি কারণে এমন দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিল মোহামেডান। এসব দেখেও কি বাফুফের কিছু করার নেই? মনে রাখতে হবে লিগে মোহামেডানের হোম ভেন্যু কুমিল্লায়। তাহলে কি এখন এমন অনুপযোগী মাঠেই খেলা চলবে?