ফুটবলপ্রেমীরা হেড কোচ হিসেবে হাভিয়ের কাবরেরাকে কোনোভাবেই যোগ্য মনে করছেন না। সমাজমাধ্যমে বিভিন্ন পোস্টেই তা প্রমাণ মিলছে। যাক, এসবে কোচ পরিবর্তন হবে তা ভাবাটাও ঠিক হবে না। কাবরেরাকে পছন্দ করছেন না স্বয়ং নির্বাচিত সদস্যরাও। সম্প্রতি বাফুফের সংবাদ সম্মেলনে নির্বাহী কমিটির সদস্য সাখাওয়াত হোসেন ভূঁইয়া শাহিন বক্তব্য দিয়ে সবাইকে অবাক করে দেন। তিনি বলেন, ‘আমার এক দফা হলো কাবরেরার পদত্যাগ। দেশের মানুষেরও একই দাবি।’ বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে কখনো জাতীয় দলের কোচকে নিয়ে সরাসরি বক্তব্য কোনো কর্মকর্তা দেননি। শাহিনের এ কথা ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। কেউ তাঁর প্রশংসা করেছেন, কেউ বা বলেছেন নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়ে এমন বক্তব্য দেওয়া ঠিক হয়নি তাঁর। এতে চেইন অব কমান্ড থাকল না। সবচেয়ে বড় কথা, শাহিন আবার বাফুফে সভাপতির খুবই কাছের মানুষ।
শাহিন তাঁর ব্যক্তিগত মত দিলেও বাফুফের পছন্দ হয়নি। অনেকে ভেবেছিলেন তাঁকে বাফুফে থেকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে। যাক, তা না করা হলেও ন্যাশনাল টিমস কমিটি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সভাপতি তাবিথ আউয়াল এখন কী করবেন? হেড কোচ কাবরেরাকে নিয়ে তো বিতর্ক থামছে না। তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আরেক নির্বাহী সদস্য ছাঈদ হাছান কানন। তিনিও আবার ন্যাশনাল টিমস কমিটির সদস্য। ন্যাশনাল টিমস কমিটি মানেই জাতীয় দলের ভালোমতো ঠিকমতো যাচাই করা। তা ছাড়া কাননের মন্তব্যকে তো আলাদা গুরুত্ব দিতেই হবে। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে বাংলাদেশের হার কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। বসুন্ধরা কিংস অ্যারিনায় অনুশীলন মাঠে সোমবার অনূর্ধ্ব-২৩ দলের প্র্যাকটিস দেখতে এসে কানন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাবরেরার বাজে ট্যাকটিসের কারণে সিঙ্গাপুরের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ।’ অর্থাৎ কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন হেড কোচকে।
শাহিন আর কাননের কথার পার্থক্য রয়েছে। দেশের একজন অন্যতম সেরা ফুটবলার কানন। জাতীয় ও ঢাকা মোহামেডানকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফুটবল তো তাঁর সবই জানা। যোগ্য না অযোগ্য কোচ বিচার করার গুণ তাঁর রয়েছে। শোনা যাচ্ছে বাফুফের অনেকেই চান কাবরেরাকে বিদায় করে নতুন কোচ আনতে। এর পরও কাবরেরা টিকে আছেন কীভাবে? এশিয়ান বাছাই পর্বের রেজাল্টের ওপর নাকি নির্ভর করছে কাবরেরার টিকে থাকা। আসলে এমন ভাবনাটা কার? সভাপতি এ নিয়ে কি কিছু ভাবছেন? হামজারা যোগ দেওয়ার পরও জাতীয় দলের দৈন্যদশা কাটছে না। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে দুই ম্যাচে ৫ পয়েন্ট হারানোর পরও নতুন কোচ নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। এর চেয়ে অবাক কাণ্ড আর কী হতে পারে?