বাংলাদেশে এসেই ঐতিহাসিক ঢাকা স্টেডিয়ামে ফুটবলে লাথি মারার সুযোগ পেয়েছেন একঝাঁক প্রবাসী তরুণ ফুটবলার। হোক না তা ট্রায়াল বা যোগ্যতার পরীক্ষা। এমন মাঠে তারা নামার সুযোগ পেয়েছেন। যাকে দেশের ফুটবলে মূল সাক্ষীই বলা যায়। ঢাকা স্টেডিয়ামের নাম বদল হয়েছে একাধিকবার। এটাই তো ফুটবলের তীর্থস্থান। কেননা একজন ফুটবলারের পরিচয়টা এসেছে মূলত এখান থেকেই। মাঝে ফুটবল চলে গিয়েছিল মিরপুর স্টেডিয়ামে। অন্য জেলাতেও খেলা হয়েছে বা হচ্ছে। তবে মূল শেকড়টা তো ঢাকা স্টেডিয়ামই। স্বপ্নের জাতীয় দলে সুযোগ এসেছিল ঢাকা স্টেডিয়ামে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে। বাংলাদেশের ফুটবলে কিংবদন্তি, সুপারস্টার বা তারকার খ্যাতিটা এসেছে এখান থেকেই। মূলত ফুটবলারের পরিচিতি মিলেছে এ ঢাকা স্টেডিয়ামে খেলে।
১৯৪৮ সাল থেকে ঢাকা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে ফুটবলের যাত্রা। ক্রিকেট, হকি আরও কত কি খেলা হয়েছে এখানে। কিন্তু এ স্টেডিয়ামের আসল পরিচয় এসেছে ফুটবল থেকেই। ঘরোয়া আসর কেন্দ্র করে যে উন্মাদনা কিংবা উত্তেজনা তা তো ফুটবল ঘিরে। এক সময়ে তো এখানে ক্রিকেটের লিগ ও টুর্নামেন্ট হতো, কিন্তু ফুটবলে যা দেখা গেছে তা তো অন্য ক্ষেত্রে হয়নি।
কত আনন্দ বেদনার ইতিহাস। যা শুনে ট্রায়ালে আসা প্রবাসী ফুটবলারদের রূপকথার গল্প মনে হচ্ছে। যত শুনছে ততই অবাক হচ্ছেন তারা। যারা শিক্ষক অর্থাৎ প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন তাদের কাছেই ঢাকা স্টেডিয়ামের স্মৃতি জড়ানো নানা কথা শুনছেন। ছাইদ হাছান কানন জানালেন, ‘সম্ভবত অভিভাবকদের কাছে ট্রায়ালে থাকা ছেলেরা শুনেছে আমি জাতীয় দল ও মোহামেডানের গোলরক্ষক ছিলাম। তাই ট্রায়ালে আসা কয়েকজন প্রবাসী জানতে চাইল আপনি যখন খেলতেন তখনকার কিছু বলেন। বললাম, ট্রায়ালে যারা কোচের দায়িত্বে তারা সবাই জাতীয় দলে খেলেছেন এবং নেতৃত্বও দিয়েছেন। এ কথা শুনে ছেলেদের মুখে কী তৃপ্তির হাসি। একজন বলেই ফেলল আমরা ভাগ্যবান।’
কানন বলেন, ‘ছেলেদের যখন মোহামেডান-আবাহনীর ম্যাচের কথা বললাম শুনে তো অবাক। স্টেডিয়ামের দুই পাশের গ্যালারি দেখিয়ে বললাম আমরা যখন খেলতাম তখন আসন সংখ্যা ছিল অনেক বেশি। এখন চেয়ার বসায় জায়গা কমে গেছে। দুই পাশের গ্যালারি ভরে দর্শকরা দাঁড়িয়ে থাকতেন। মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে তো মাঠে বসেও হাজার হাজার দর্শক খেলা দেখতেন। ম্যাচের চার ঘণ্টা আগে গ্যালারি ভরে যেত। ম্যাচ ঘিরে পুরো দেশই উত্তেজনায় কাঁপত। তোমরা সেই স্টেডিয়ামে ট্রায়াল দিচ্ছ। ছেলেরা আমার কথা শুনে অবাক। বললাম তোমরা যখন খেলবে তখন তোমাদেরও হাজার হাজার দর্শক স্বাগত জানাবে। এক ছেলে বলেই ফেলল দাদার মুখে মোহামেডান-আবাহনীর কথা শুনেছি। ফুটবলে বাংলাদেশের এমন সোনালি যুগের কথা শুনে সত্যিই পুলকিত হচ্ছি।’