শরৎচন্দ্র নিয়মিত বিভিন্ন সাহিত্যসভায় যেতেন। একবার কবি শেখর কালিদাস রায় প্রতিষ্ঠিত রসচক্র সাহিত্যসংস্থার সাহিত্য সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে গেছেন তিনি। তাঁকে পেয়ে নবীন কবি-সাহিত্যিকরা স্বভাবতই উৎফুল্ল। শরৎচন্দ্র বক্তব্য রাখতে উঠলেন। সবাই চুপ। তিনি নবীন কবিদের উদ্দেশে বললেন, ভাইসব, তোমরা যারা কবিতা লেখ, তারা কবিতা লেখা ছেড়ে দাও। নবীন কবিরা তো অবাক। কী বলছেন শরৎচন্দ্র! কেনই বা এমন বলছেন! উনি নিজে একজন বিখ্যাত লেখক হয়ে এমন কথা কী করে বললেন!। সবাই এ ওর মুখ চাইতে শুরু করে দিলেন।
এরপর শরৎচন্দ্র হাসতে হাসতে বললেন, খুব খারাপ লাগছে আমার কথা শুনে? আসলে একটু ভেবে দেখো- যে বিষয়েই কবিতা লিখতে যাওনা কেন, দেখবে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ আগ বাড়িয়ে সব লিখে রেখেছেন। তাই তো আমি কবিতা লেখা ছেড়ে দিয়ে হতাশ হয়ে গল্প লেখা শুরু করলাম। নইলে আমিও তোমাদের মতো কবিতা লেখা দিয়েই লেখালিখি শুরু করেছিলাম। শরৎচন্দ্রের কথা শুনে রাসচক্র সাহিত্যসভায় হাসির রোল উঠল। রসিক শরৎচন্দ্র যে সাহিত্যসভায় যেতেন, সেখানে প্রত্যেককেই মাতিয়ে তুলতেন।